খালেদার কার্যালয়ে বেড়েছে পুলিশের তৎপরতা

আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বেড়েছে, যেখানে গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2015, 10:46 AM
Updated : 25 Feb 2015, 10:46 AM

অবরুদ্ধ দশা থেকে দৃশ্যত মুক্ত হলেও গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে গুলশানের ওই কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সেখানে ঢোকা নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সদস্যরা।  

বুধবার দুর্নীতির দুই মামলায় ঢাকার জজ আদালত খালেদার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর গুলশান কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি দেখা যায়।

কার্যালয়ের ছোট ফটকটির বাইরে আগে এসবির তিনজন সদস্য থাকতেন। বুধবার দুপুরের পর থেকে সেখানে পাঁচজনকে দেখা যাচ্ছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দারাও কার্যালয়ের আশপাশে রয়েছেন। গোয়েন্দা পুলিশের একটি মাইক্রোবাসও সেখানে দেখা যাচ্ছে।

পোশাকধারী পুলিশের অবস্থান রয়েছে কার্যালয়ের ডান দিকে এবং ৮৬ নম্বর সড়কের দুই পাশে ব্যারিকেডের কাছে।

কে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকছে, কে বের হচ্ছে, তাদের ভিডিও চিত্রও ধারণ করছে পুলিশ।

কার্যালয়ের সামনে কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গুলশান ও বনানী থানায় পৌঁছেছে বলে তারা খবর পেয়েছেন।

“এজন্য আমাদের নিরাপত্তা নজরদারি কঠোর করা হয়েছে। তবে আদালতের কোনো আদেশ আমাদের এখানে আসেনি,” বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পুলিশ কর্মকর্তা। 

খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের এই ছবি গত ২৩ ফেব্রুয়ারির

গত ৩ জানুয়ারি থেকে কার্যালয়ে অবস্থানরত খালেদার সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মী, ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা রক্ষী মিলিয়ে অর্ধশত জন রয়েছেন। 

খালেদা জিয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবর ইতোমধ্যে পেয়েছেন বলে ওই কার্যালয়ে থাকা তার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আদালতের সর্বশেষ আদেশের বিষয় ম্যাডামকে অবহিত করা হয়েছে। বিষয়টি আইনজীবীরা দেখছেন। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়াও তারা দিয়েছেন, দেবেন।”

জিয়া অরফ্যানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ধার্য তারিখে হাজির না হওয়ায় সকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার।

দশম সংসদ নির্বাচনের বছর পূর্তিতে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে গত ৩ জানুয়ারি পুলিশের বাধায় কার্যালয় থেকে বের হতে না পারে সেখানে অবস্থান নেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

এরপর ওই কার্যালয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে পুলিশ। কয়েকদিন বাদে পুলিশি বেষ্টনি সরিয়ে নেওয়া হলেও কার্যালয় ছাড়েননি খালেদা। মালয়েশিয়া থেকে ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের লাশ এলে কার্যালয়ে থেকেই ছেলেকে শেষ বিদায় জানান তিনি।

কয়েকদিন ওই কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের ঢোকা-বের হওয়া অবাধ হলেও ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ফের নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। সেখানে খাবার ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। মাঝে একবার বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়।  

খালেদা জিয়ার স্বজন ছাড়া আর নেতা-কর্মীদের কাউকে সেখানে ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ।