পাশাপাশি সংগ্রহশালায় থাকা মান্নার ছবিও নামিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জয়দেব নন্দীর নেতৃত্বে মঙ্গলবার দুপুরে ডাকসু ভবনে যাওয়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
মান্না ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সালে দুই মেয়াদে ডাকসুর ভিপি ছিলেন। বামপন্থি ছাত্র সংগঠনের এই নেতা আওয়ামী লীগ হয়ে বর্তমানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক।
বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে মান্নার কথোপকথনের দুটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে ছাত্রলীগের এই তৎপরতা দেখা গেল।
আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জয়দেব নন্দী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিনি সরকারকে উৎখাত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই-তিনটি লাশ ফেলে দেওয়ার কথা বলেন, তাই আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হয়ে এই ষড়যন্ত্র মেনে নিতে পারি না।
“আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোথাও নাম থাকতে দেব না।”
কথোপকথনের দুটি অডিও ক্লিপ রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে আসে, যার ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
এসব ক্লিপে মান্নাকে চলমান পরিস্থিতিতে সেনা হস্তক্ষেপের উদ্যোগে আগ্রহ প্রকাশ করতে শোনা যায়। পাশাপাশি বিএনপি জোটের আন্দোলন জোরদারে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার কথাও বলতে শোনা যায় তাকে।
এর ভিত্তিতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্নাকে গ্রেপ্তারের দাবিও উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখ থেকে।
মান্নাকে সোমবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয় দিয়ে তার ভাইয়ের বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তবে তাকে আটকের খবর নাকচ করেছে পুলিশ।
চাকসু থেকেও মান্নার নাম মুছল
ডাকসুর পর চাকসুর বোর্ড থেকেও মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম মুছে ফেলা হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মান্নার নাম মুছে দেন।
চাকসু ভবনে সংরক্ষিত সাবেক চাকসু নেতাদের নামের তালিকা থেকে কালি দিয়ে মান্নার নাম মুছে দেওয়া হয়। নামিয়ে ফেলা হয় চাকসুতে থাকার মান্নার ছবিটিও।
এম এ খালেদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্র রাজনীতি করা একজন ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের লাশ চান, এটা মেনে নেওয়া যায় না।
“তাই চাকসুর তালিকা থেকে তার নাম আমরা মুছে দিয়েছি। আমরা মান্নার ছাত্রত্ব ও সনদ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ১৯৭২ সালে জাসদ ছাত্রলীগ থেকে চাকসুর জিএস নির্বাচিত হন মান্না।