খালেদা সুস্থ, অসুস্থ সেলিমা-নজরুল

দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানরত খালেদা জিয়া সুস্থ রয়েছেন, তবে তার সঙ্গে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান কিছুটা অসুস্থ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2015, 11:56 AM
Updated : 23 Feb 2015, 03:08 PM

সোমবার ওই কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. তাহির।

দুপুরের পর অধ্যাপক তাহিরের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের পাঁচ সদস্যের একটি দল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢোকেন। তিন ঘণ্টা পর তারা বেরিয়ে আসেন।

অধ্যাপক তাহির বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা হয়েছে। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা আমি করিনি। তবে দেখে মনে হয়েছে, তিনি সুস্থ আছেন।

“কিন্তু সেলিমা রহমানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছি। তিনি অসুস্থ বলে আমার মনে হয়েছে। নজরুল ইসলাম খান সাহেবকে আমি দেখেছি। তিনিও খুব একটা ভালো নেই, দেখে মনে হয়েছে। আরও অনেককে দেখেছি, সবার নাম-ধাম জানি না।”

গত ৩ জানুয়ারি ওই কার্যালয়ে আটকা পড়ার সময় থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আছেন সেলিমা। নজরুল ইসলাম গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে রয়েছেন।  

অধ্যাপক তাহিরের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের দলে ছিলেন বিএসএমএমইউর অর্থোপেডিকস বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তৌহিদুল হক, এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক এসএম রফিকুল ইসলাম ও নার্স লাবণী।

তারা বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অবস্থানরত অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি কড়াকড়ি আরোপের পর খালেদার স্বজনদের বাইরে চিকিৎসকদের এই দলটিকে ভেতরে ঢুকতে দিল পুলিশ।  

নিজে কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নন জানিয়ে ডা. তাহির সাংবাদিকদের বলেন, “আমি দলমত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক নেতাদের চিকিৎসা করেছি, করছিও। এখানে এসেছি বেগম জিয়াসহ নেতাদের দেখতে।

“বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা আমাকে অনুরোধ করেছিল, স্যার আপনি দেখে যদি একটু ওপিনিয়ন দেন, তা আমাদের জন্য ভালো হয়। সেজন্য বেগম জিয়াসহ নেতাদের দেখতে এসেছি। এই আসার মধ্যে কোনো প্রকার রাজনীতি নেই।”

বেলা আড়াইটার দিকে চিকিৎসক দলটি একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদার কার্যালয়ের কাছাকাছি এলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। এরপর চিকিৎসকরা হেঁটে কার্যালয়ের দিকে এগোন।

তারা ফটকের সামনে গেলে পুলিশ সদস্যরা তাদের ফের আটকে দেন। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ২টা ৫৫ মিনিটে তাদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়।

ভেতরে ঢোকার সময় অধ্যাপক তাহির পুলিশকে বলেন, “ওয়ান-ইলেভেনের পর আমি আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে স্কয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদকে দেখতে গিয়েছি। আমি মেডিসিনের প্রবীণ চিকিৎসক।”

গত ৩ জানুয়ারি পুলিশের বাধায় কার্যালয়ে আটকা পড়ার পর ৫ জানুয়ারি বের হওয়ার সময় ফের বাধা পেয়েছিলেন খালেদা। তখন পেপার স্প্রেতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসকরা তাকে দেখে আসেন।

বেশ কয়েকদিন অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ বেষ্টনি সরিয়ে নিলেও খালেদা জিয়া কার্যালয় ছাড়েননি। মালয়েশিয়া থেকে ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর লাশ আসার পর কার্যালয়েই তাকে শেষ বিদায় জানান তিনি। 

এরপর তার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ ফিরলেও ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে থাকা নেতা-কর্মী-কর্মকর্তাদের খাবার নিতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ।