কোন জিনিসকে কি বানিয়েছেন: মান্না

দুটি টেলিফোন কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কার্যত ওই ফোনালাপের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2015, 09:28 AM
Updated : 23 Feb 2015, 10:08 AM

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় সংলাপের অন্যতম উদ্যোক্তা মান্নার সঙ্গে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির কথোপকথনের অডিও ক্লিপের ভিত্তিতে রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এর মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথনে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না সেনা হস্তক্ষেপে ভূমিকা রাখতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আর খোকার সঙ্গে আলাপে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা বলতে শোনা যায়, যিনি এক সময় ডাকসুর ভিপি ছিলেন, পরে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।

এ বিষয়ে প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় মান্না মৃদু হেসে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোন জিনিসকে কি বানিয়েছেন আপনারা, কিসের কি হেডিং বানিয়েছেন! দেখে আমি খুব অবাক, বিস্মিত ও দুঃখিত।”

কথোপকথনের কণ্ঠ তার নয়,এমন কোনো দাবিও মান্না করেননি।

দুই জনের সঙ্গে ওই আলাপচারিতার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে ফেইসবুকে নিজের পৃষ্ঠায় এক পোস্টে নিজের অবস্থানের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মান্না। তার দাবি, কোথাও কোনো ‘ষড়যন্ত্রের গন্ধ নেই, উসকানি’ নেই।

“সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে কথা হয়েছে আলাপচারিতার মতো আন্দোলনের প্রসঙ্গ এসেছে আমি বলেছি, গণতন্ত্রের দাবিতে আমি আন্দোলনে সমর্থন করি। সহিংসতা সমর্থন করি না। এ থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে ব্যাপক জনগণকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত। সহিংসতা দায়িত্ব নিয়ে বর্জন করা উচিত।

“এ আন্দোলনে এখনও ছাত্ররা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। এ জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত ও বিস্তৃত করতে হবে। এটা করতে গিয়ে যদি পুলিশি বা সন্ত্রাসী হামলায় দু’চার জনের জীবনও যায় কিছু করার নেই।”

মান্না বলছেন, “এমনিতেই তো মানুষ মরছে। আমার এই বক্তব্যকে বিকৃতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেন আমি লাশ চাই।”

অপর টেলি কথোপকথন প্রসঙ্গে তার ব্যাখ্যা, “সেনাবাহিনীর কোনো কোনো কর্মকর্তা আমার সাথে কথা বলতে আগ্রহী হলে বলব কি না সে কথা জানতে চাইলে, আমি বলেছি রাজি আছি। আমি রাজনীতি করি সবার সঙ্গে কথা বলতে হয়। এটা থেকে এক এগারো বা সামরিক কু’য়ের ষড়যন্ত্রের আবিষ্কার হয় কীভাবে? যেখানে এরকম কোনো বৈঠকই হয়নি।”

২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পান মান্না, যিনি ওই সময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

নির্বাচনের পর দলীয় পদ হারিয়ে গত মহাজোট সরকারের সময়ে তিনি নাগরিক ঐক্য গঠন করেন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গতবছরের মাঝামাঝি ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ‘মাঠে নামার’ ঘোষণা দেন মান্না। মূলত ওই সময়ই গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও সিপিবি-বাসদের সঙ্গে জোট করে তৃতীয় শক্তি গঠনের উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন মান্না।

সম্প্রতি বিএনপির টানা হরতাল অবরোধের মধ্যে সুশীল সমাজের একাংশকে নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক’ নামের একটি মঞ্চ গঠন করেন কামাল-মান্না। এই মঞ্চ থেকে একাধিকবার সংলাপের আহ্বান জানান মান্না, কামাল ও কাদের সিদ্দিকী।