রাজনীতিবিদরাই এখন দেশের সমস্যা: এরশাদ

বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে হতাশা প্রকাশ করে এর জন্য রাজনীতিক হিসেবে দায় স্বীকার করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2015, 03:24 PM
Updated : 11 Feb 2015, 03:50 PM

বুধবার জাতীয় যুব সংহতির সম্মেলনে তিনি বলেন, “নিয়তির কি নিষ্ঠুর পরিহাস! আমরা রাজনীতিকরা যাদের কাছে ভোট ভিক্ষা করি, আজ তারা আমাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাচ্ছে। কিন্তু তাদের কান্না আমাদের স্পর্শ করছে না। আমরা বধির হয়ে গেছি, মূক হয়ে গেছি।”

মঞ্চে পাশে থাকা মহাসচিবকে দেখিয়ে তিনি বলেন, “আমরা রাজনীতিকরা এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছি।

“সেদিন সন্ধ্যায় বাবলু (জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু) আমার বাসায় এসেছিল। আমি বাবলুকে বললাম- বাবলু চল, পার্টি অফিসে যাই। বাবলু বলল- স্যার আজকে থাক, রাস্তায় বিপদ আপদ হতে পারে। আমি বললাম- কী বলছ বাবলু! আমার পার্টি অফিসে আমি যেতে পারব না! বাবলু দুঃখ করে বলল- স্যার, আর রাজনীতি করতে ইচ্ছা করে না। মন চায় রাজনীতি ছেড়ে দেই।”

“আজ প্রজাতন্ত্রের মালিককে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে! এই ক্ষমতাকে ধিক্কার দেই! এই ক্ষমতাকে থু থু দেই! এই কি সেই গণতন্ত্রের চিত্র, যার জন্য দুই যুগ আগে আমি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলাম,” বলেন গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এই সামরিক শাসক।

বিএনপি জোটের সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “দেশে এসএসসি পরীক্ষা চলছে, আর বিএনপির এক নেতা বলেছেন- কিসের পরীক্ষা! আগামী প্রজন্মের পরীক্ষা তাদের কাছে বড় নয়; বড় হল কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়।”

“পেট্রোল বোমা দিয়ে গণতন্ত্র কায়েম করা যায় না। এটা অসুস্থ, অপরাজনীতি। হত্যার রাজনীতি রাজনীতিকে হত্যা করে। এই রাজনীতির মূলোৎপাটন করতে হবে। আমরা অসুস্থ-অপরাজনীতি দেখতে চাই না,” বলেন তিনি।

বিএনপির পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও কিঞ্চিৎ সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ।

“গণতন্ত্র মানে হলো সহনশীলতা, পরমত সহিষ্ণুতা। আমরা পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে ফেলেছি। আমরা অনড়-অটল। আমরা ক্ষমতায় থাকব, থাকবই।” 

দুই দলের অনড় অবস্থান জাতীয় পার্টির জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে মনে করেন এরশাদ। এজন্য জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের সক্রিয় হতে বলেন তিনি।

“মানুষ অনেক আশা নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা হাটে মাঠে বলা শুরু করেছে- এর চেয়ে জাতীয় পার্টির সময় আমরা ভালো ছিলাম। আমি তো শুনি, তোমরা শুনতে পাও না?”

এরশাদের প্রশ্নের জবাবে কর্মীরা সমস্বরে বলে ‍ওঠেন, “জ্বি স্যার।”

শুনে এরশাদ বলেন, “শোনো, ইটস নট ডিফিকাল্ট। পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কিছু নেই। সামনের নির্বাচনে আমরা এটা প্রমাণ করব।”

কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুব সংহতির এই অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বাবলু ছাড়াও ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এম এ হান্নান, সাহিদুর রহমান টেপা প্রমুখ।