খালেদা জিয়ার খাবারও বন্ধ করা হবে: শাজাহান

খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর খাবার সরবরাহও বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2015, 03:17 PM
Updated : 31 Jan 2015, 03:17 PM

শনিবার বিকেলে বাগেরহাটের রামপাল খেয়াঘাটে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের ওই বাড়িটি তার কার্যালয় হলেও গত ৩ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে থাকা খালেদা গত ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করতে না পেরে লাগাতার অবরোধের ঘোষণা দেন।

খালেদার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, “খালেদা জিয়ার বাসার বিদ্যুৎ সংযোগ সরকার বিচ্ছিন্ন করেনি। আমাদের শ্রমিক-কর্মচারীরাই এটি বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষ অবরোধ-হরতাল মানে না। খালেদা জিয়া জনগণকে প্রতিপক্ষ হিসাবে ধরে নিয়েছেন।

 “দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। শুধু তাই না, তার খাবারও আমরা বন্ধ করে দিব। খাবার নিয়ে সেখানে কেউ ঢুকতে পারবে না। আমার শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের হাতের টিফিন ক্যারিয়ার ছিনিয়ে নেবে, খালেদা জিয়াকে খেতে দেবে না। আমরা সমস্ত পোড়া গাড়ি নিয়ে তাকে ঘেরাও করব। খুব শিগগিরই এই প্রোগ্রামটা আপনারা দেখবেন।”

দুই সপ্তাহ আগে গুলশানের ওই বাড়ির সামনে থেকে পুলিশবেষ্টনীসহ সব ধরনের ব্যারিকেড তুলে নেওয়া হলেও কার্যালয় ছাড়েননি বিএনপিপ্রধান। এর মধ্যে টানা ২৪ দিনের অবরোধ ও ফাঁকে হরতালের মধ্যে গাড়িতে আগুনসহ সহিংসতায় অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে; দগ্ধসহ আহত হয়েছেন আরো শতাধিক।

বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আগে রাত ৯টার দিকে ওই কার্যালয়ের চিত্র

সর্বশেষ শুক্রবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর দিন ঘিরে সারা দেশে ৭২ ঘণ্টা হরতালের ঘোষণা দেয় বিএনপি। রোববার থেকে শুরু হওয়া ওই হরতালের পরদিন থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর সূচি রয়েছে, যাতে অংশ নেবে প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থী।

এই অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে এসএসসি পরীক্ষার আগে অবরোধ-হরতাল প্রত্যাহার করা না হলে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেন শাজাহান খান।

ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে হরতাল নিষিদ্ধের দাবির বিষয়ে নৌমন্ত্রী বলেন, “ব্যবসায়ীরা এটা বলতেই পারেন। কিন্তু এর দায়-দায়িত্ব সরকার নেবে না। এর দায় খালেদা জিয়াকে নিতে হবে। কারণ তারা এগুলো শুরু করেছেন।”

আওয়ামী লীগের হরতালের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারিনি। এটি (বিএনপি জোটের কর্মসূচি) কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন নয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।

“এক সময় দেখেছি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দল আন্দোলন করে। এখন দেখছি তারা জনগণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। তা না হলে পেট্রোল বোমা মেরে তারা মানুষ হত্যা করছে কেন?”

শাজাহান খান বলেন, ২০১৩ সালে বিএনপির সহিংস কর্মসূচিতে ৫৮ জন গাড়ির ড্রাইভার-হেলপার, ১৭ পুলিশ ও তিনজন বিজিবি নিহত হয়েছে।

“দেড় বছর যেতে না যেতেই আবার শুরু করেছে। সেই একইভাবে পেট্রোল বোমা মেরে তারা ১৬ জন ড্রাইভার-হেলপার এবং ৪২ জন সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে।”

শনিবার ভারত-বাংলাদেশ নৌ-প্রটোকলভুক্ত মংলা-কুমারখালী-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের খনন কাজে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না হারবার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অংশগ্রহণ উদ্বোধন করতে রামপালে আসেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

আগামী জুন মাসের মধ্যেই চ্যানেলের খনন কাজ শেষ হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমাদের ড্রেজার ছিল না, আমরা অনেকগুলো ড্রেজার কিনেছি। সেগুলো কাজ করছে। বিদেশি ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই কাজ করছি।”

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট-৩ আসনের এমপি তালুকদার আব্দুল খালেক, বিআইডাব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. সামছুদ্দোহা খন্দকার, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা ও চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

</div>  </p>