পরীক্ষার মধ্যে অবরোধের সঙ্গে ৭২ ঘণ্টার হরতাল

এসএসসি পরীক্ষার মধ্যেও অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর এবার ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডাকল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2015, 11:54 AM
Updated : 30 Jan 2015, 01:05 PM

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টা ঢাকাসহ সারা দেশে এই কর্মসূচি চলবে।  

এদিকে ২ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর সূচি রয়েছে, যাতে অংশ নেবে প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থী।

পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে অবরোধ প্রত্যাহারে শিক্ষামন্ত্রীর আহবান নাকচ করে দুপুরে এক বিবৃতিতে রিজভী জানান, তাদের ‘শান্তিপূর্ণ’ অবরোধ অব্যাহত থাকবে।

এর ঘণ্টখানেক পর তার আরেক বিবৃতিতে সারা দেশে হরতালের ঘোষণা আসে। 

এই ঘোষণায় বিএনপি চেয়ারপারন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় উড়িয়ে দেওয়া ও তাকে গ্রেপ্তারের ‘হুমকি’, ‘যে কোনো উপায়ে’ নাশকতা বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খানের বাসায় গুলি; তরিকুল ইসলাম, খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও শফিক রেহমানের বাসায় ‘বোমা নিক্ষেপ’; রিয়াজ রহমানকে ‘হত্যার চেষ্টা’; সাবিহ উদ্দিন আহমেদের গাড়িতে ‘অগ্নিসংযোগ’, অবরোধ চলাকালে ২১ জন নেতা-কর্মীকে ‘সরাসরি গুলি করে হত্যা’; ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধের নামে ‘হত্যা’ এবং সারাদেশে ২০ দলীয় জোটের  ‘পনের হাজারের বেশি’ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ‘মিথ্যা মামলা’ দায়েরসহ অনেকগুলো কারণের তালিকা দিয়েছেন রিজভী।

তিনি বলেন, “গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী রবি, সোম ও মঙ্গলবার ৭২ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল পালিত হবে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে ঢাকায় সমাবেশ করতে না পেরে লাগাতার অবরোধের ঘোষণা দেন। এই কর্মসূচির মধ্যে প্রতি সপ্তাহেই দেশের বিভিন্ন স্থানে হরতাল চলছে।

এই অবরোধ-হরতালে প্রতিদিনই বাসে আগুন দেওয়া ও পেট্রোল বোমা ছোড়ার মতো ঘটনা ঘটছে, সহিংসতা ও নাশকতায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৯ জনের। দুটি ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করে মামলাও হয়েছে।

অবশ্য রিজভী বিবৃতিতে দাবি করেছেন, “সরকারি এজেন্ট দিয়ে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে নাশকতা সৃষ্টি করার পর সরকার এর দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপাচ্ছে।”

এ বিষয়টিকেও হরতাল ডাকার একটি কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন রিজভী, যিনি অবরোধের শুরু থেকেই ‘অজ্ঞাত স্থান থেকে’ নিয়মিত বিবৃতি দিয়ে দলের অবস্থান জানিয়ে আসছেন।