বৃহস্পতিবার কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী এই কর্মসূচির সমাপনী বক্তব্যে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল থেকে মুখ ফেরানোর জন্য জনগণের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
এরশাদ বলেন, “কতদিন আমরা এভাবে অত্যাচার সহ্য করব। এখন প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময়। দুই দল যে আগুন জ্বালিয়েছে, জাতীয় পার্টিই সে আগুন নেভাবে।”
নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট প্রায় এক মাস ধরে টানা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে নাশকতায় প্রাণহানি ঘটেছে প্রায় ৪০ জন মানুষের।
অন্যদিকে বিএনপিবিহীন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপির অসাংবিধানিক দাবি না মানতে অটল।
এর ফলে চলমান অস্থিরতায় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহলের উদ্বেগের মধ্যে সংঘাত ছেড়ে দুই পক্ষকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে অনশনে বসে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।
অনশন কর্মসূচিতে মূল মঞ্চে এরশাদের পাশে তার ভাই, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জি এম কাদেরকেও দেখা গেলেও ছিলেন না চেয়ারম্যানের স্ত্রী, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদকে।
মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুসহ দলের নেতারা মঞ্চে বিছানো কার্পেটের ওপর বসলেও এরশাদ বসেন একটি চেয়ারে। পরে এবং জি এম কাদেরের জন্যও মঞ্চে একটি চেয়ার আনা হয়।
যে দুই নেত্রীর সম্মিলিত আন্দোলনে দুই যুগ আগে যার পতন ঘটেছিল বাংলাদেশে, সেই এরশাদই এখন দুই নেত্রীকে একসঙ্গে বসার আহ্বান জানাচ্ছেন।
দুই প্রধান দলের আচরণে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ উঠে যাচ্ছে। আমরা মনে হয় সামাজিক শিষ্টাচারও ভুলে যাচ্ছি। যা অবস্থা হচ্ছে, তাতে মনে হয় ক’দিন পরে আমরা এক মসজিদে নামাজও পড়তে পারব না।”
বিরোধী জোটের অবরোধে নাশকতার শিকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান এরশাদ।
গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত এই সামরিক শাসক পুনরায় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার আশাও প্রকাশ করেন।
“১৯৯১ থেকে আজ পর্যন্ত কোনো সংসদই কার্যকর হয়নি। এ গণতন্ত্র কি আমরা চেয়েছিলাম? ক্ষমতার লোভে নয়, জনগণের জন্য ক্ষমতায় এসেছিলাম, আবার ক্ষমতায় আসতে চাই।”