পুত্রশোকে কাতর খালেদার সঙ্গী এখন নাতনি

ছেলেকে হারিয়ে ছোট নাতনি জাহিয়া রহমানকে কাছছাড়া করছেন না দাদি খালেদা জিয়া।

সুমন মাহমুদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2015, 03:06 PM
Updated : 28 Jan 2015, 03:45 PM

সাত বছর পর বাবা আরাফাত রহমান কোকোর লাশ নিয়ে বাংলাদেশে ফেরা জাহিয়াও দাদীর কাছ ছাড়া হচ্ছেন না বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করে আসা একাধিকজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

২০০৮ সালে স্ত্রী শর্মিলা রহমান, মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে দেশ ছাড়ার পর মালয়েশিয়ায় থাকা অবস্থায় গত ২৪ জানুয়ারি হৃদরোগে মারা যান তিনি। 

মঙ্গলবার লাশ নিয়ে দেশে আনার পর বায়তুল মোকাররম মসজিদে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় আরাফাতকে। তার কুলখানির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।  

দুই মেয়েকে নিয়ে গুলশানে শ্বাশুড়ির কার্যালয়ে ওঠা শর্মিলা বুধবার বিকালে দুই মেয়েকে নিয়ে স্বামীর কবর জিয়ারতে যান বলে ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

কবর জিয়ারতে যাচ্ছেন শর্মিলা রহমান

বাবার কবর থেকে ফিরে আট বছর বয়সী জাহিয়া আবার দাদির কাছেই চলে যান। সন্ধ্যায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে কক্ষে ঢুকেই জাহিয়াকে কাছে নিয়ে আদর করেন।

রাহাত আরা জানান, তার স্বামী কারাবন্দি ফখরুল কাকতালীয়ভাবে আরাফাতের কফিন দূর থেকে দেখেছেন। ফখরুলকে একটি মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কারাগারে। কারওয়ান বাজার অতিক্রমের সময় তিনি আরাফাতের কফিন দেখেন, যা যাচ্ছিল জানাজার জন্য বায়তুল মোকাররমে।

মঙ্গলবার দুপুরের পর ছেলেকে শেষ বিদায় জানানোর পর স্বজনরা ধরাধরি করে খালেদা জিয়াকে ওপরে নিয়ে যান। ৩ জানুয়ারি থেকে ওই কার্যালয়ের দোতলায় নিজের চেম্বারে থাকছেন অবরোধ আহ্বানকারী বিএনপি চেয়ারপারসন।

ছেলের মৃত্যু সংবাদ আসার দোতলায় নিজের চেম্বারে রয়েছেন খালেদা। আত্মীয়-স্বজন ছাড়া কেউই তার কক্ষে যেতে পারেনি। আরাফাতের কফিন আসার পর ৪০ মিনিটের জন্য নিচ তলায় নেমেছিলেন তিনি।

এরপর মঙ্গলবার রাত আরাফাতের ছোট মেয়ে জাহিয়াকে নিয়ে কাটিয়েছেন খালেদা। কান্নারত খালেদার চোখও টিস্যু দিয়ে মুছে দেয় নাতনী।

কোকোর দুই মেয়ে বুধবার বাবার কবরে যাওয়ার আগে কার্যালয়ের নিচতলায় কিছু সময় ঘুরে বেড়ান। শোক বইয়ের সামনে রাথা আরাফাতের ছবির সামনে জাফিয়া চুপ করে দাঁড়িয়েছিল, বাবার ছবিতে চুমু খায় জাহিয়া।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসের বখতিয়ার, সাবেক কূটনীতিক খালেকুজ্জামান, এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, কার্টুন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিউল্লাহ চৌধুরী, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক, বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আলী, সাবেক ছাত্রনেতা সানাউল হক নীরু শোক বইয়ে সই করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহউদ্দিন আহমেদ, মোসাদ্দেক আলী, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।