সেই কথা তুললে মামলা করব: নানক-আজম

শাহবাগে শেরাটন হোটেলের সামনে ১১ বছর আগে গাড়ি পুড়িয়ে মানুষ হত্যার ঘটনায় জড়িয়ে কেউ কথা বললে তার বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2015, 02:48 PM
Updated : 26 Jan 2015, 02:48 PM

বিএনপি জোটের চলমান অবরোধে নাশকতার ঘটনাগুলোর জবাবে চারদলীয় জোট সরকার আমলের ওই ঘটনাটি তুলে ধরে আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বিরোধী নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তারা দুজন সোমবার এই হুঁশিয়ারি দেন।   

২০০৪ সালে শেরাটন হোটেলের সামনে বিআরটিসির একটি দ্বিতল বাসে গানপাউডার ঢেলে আগুন দেওয়া হয়, যাতে ১১ জন যাত্রী ‍পুড়ে মারা যান।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান নানক ও সাধারণ সম্পাদক আজমকে ওই মামলায় আসামি করা হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০১৩ সালে দলটির কেন্দ্রীয় দুই নেতা নানক ও মির্জা আজমকে ওই মামলা থেকে আদালত অব্যাহতি দেয়। নানক বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, মির্জা আজম পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী।

সোমবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমণ্ডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আজমকে পাশে রেখে নানক বলেন, “শেরাটন হোটেলের সামনে দ্বিতল বিআরটিসির বাস পোড়ানোর ঘটনায় আমি ও মির্জা আজম জড়িত ছিলাম না।

“এরপরও ওই ঘটনা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও টক শোতে বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবীরা আমাদের পর দায় চাপালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।”

চলমান অবরোধে বিভিন্ন স্থানে গাড়ি পুড়িয়ে মানুষ হত্যার জন্য কর্মসূচি আহ্বানকারী বিএনপি জোটকে দায়ী করে আসছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পুলিশের মামলায়ও আসামি করা হচ্ছে বিএনপি নেতাদের।

বিএনপি নেতারা নাশকতার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ নাকচ করে ২০০৪ সালের ওই ঘটনা তুলে ধরে বলছেন, বাসে আগুন দেওয়ার ইতিহাস আওয়ামী লীগেরই রয়েছে।

ওই মামলায় আদালত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আদেশের অনুলিপি সংবাদ সম্মেলনে দেখিয়ে নানক বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের লুৎফুজ্জামান বাবরের ‘ষড়যন্ত্রে’ তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

“বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের একটি নাটক সাজানোর অপচেষ্টা সম্পর্কে আমরা ১৪ জুলাই ২০০৪ ইং তারিখে সাংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমগ্র জাতির সামনে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছিলাম। আমরা সেদিন বলেছিলাম, নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে স্পর্শকাতর এলাকায় গানপাউডার অথবা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরকের সাহায্যে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বিরোধীদলীয় কোনো নেতা বা কর্মীর পক্ষে সম্ভবপর নয়।”

এর ব্যাখ্যা দিয়ে নানক বলেন, সেদিন শেরাটন হোটেলে অবস্থানকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য প্রায় ১ বর্গকিলোমিটার এলাকায় সরকারের উদ্যোগে নেওয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

“মানুষ মারার দায় চাপিয়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার হীন উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ আহূত হরতালের পূর্ব রাতে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দ্বারা পুলিশের সহায়তায় এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটানো হয়েছিল।”

চলমান অবরোধে নাশকতার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের আসামি করে মামলার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি বলছে, তাদের আন্দোলন সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে সরকার গাড়িতে আগুন ও বোমাবাজি করছে।