হরতালে নাশকতায় সরকারের লোক: রিজভী

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের হরতালকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রুহুল কবির রিজভী।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2014, 06:13 AM
Updated : 29 Dec 2014, 06:42 AM

সোমবার হরতালের সকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, “৫ জানুয়ারির পূর্বাপর ঘটনার মতো সরকার আবারও পুরনো নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে। সরকার তার এজেন্টদের দিয়ে যাত্রীবাহী বাসসহ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করিয়ে এর দোষ বিরোধীদের ওপর চাপাতে চায়।”

হরতালের আগে রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও শহীদ মিনার এলাকায় বোমায় আহত হন দুইজন। আর কাজীপাড়ায় অটোরিকশায় দেওয়া আগুনে আরো তিনজন দগ্ধ হন।

এছাড়া পল্টনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়; গাজী ভবনের সামনের সড়কে বোমাবাজিও হয়।

সোমবার হরতালের সকালে মিরপুরের পল্লবীতে গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা করে হরতালকারীরা। নোয়াখালীতে পিকেটারদের ঢিলের আঘাতে নিহত হন ঢাকার এক স্কুল শিক্ষিকা। 

এতে বিএনপি বা শরিকদের দায় অস্বীকার করে রিজভী বলেন, “আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এসব নাশকতার কাজ সরকারই করাচ্ছে।’’

এদিকে হরতালের মধ্যে ভোর থেকেই নয়া পল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন। দলীয় কার্যালয়ে কোনো নেতা-কর্মীকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।

সকাল পৌনে ৯টার দিকে মো. কাওসার ও রওশন নামে দুইজন কর্মী প্রধান ফটক দিয়ে কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধরে প্রিজন ভ্যানে করে পল্টন মডেল থানায় নিয়ে যায়।

সাজোঁয়া যান, জলকামানের গাড়ি ও প্রিজন ভ্যান নিয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসের আশেপাশে অবস্থান করছে। এই এলাকার দোকানপাটও সকাল থেকে খোলেনি। নয়া পল্টন সড়কে যানবাহন চলতে দেখা গেলেও তা সংখ্যায় কম।

যুগ্ম মহাসচিব রিজভী ও অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম রাতে দলীয় কার্যালয়েই অবস্থান করেন। ভোরে কার্যালয়ে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপিকর্মীদের কোনো তৎপরতা ওই এলাকায় দেখা না গেলেও সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মীরা ১০/১২টি মোটর সাইকেলে করে স্লোগান দিতে দিতে নয়া পল্টন সড়ক দিয়ে কাকরাইলের দিকে চলে যায়।

রিজভী বলেন, “সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পদে পদে বাধা দিচ্ছে। সারাদেশে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। মীরপুরের পল্লবীতে যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিলে পুলিশ গুলি করেছে। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের স্বপন নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সিলেটে শান্তিপূর্ণ মিছিল থেকে মহানগর আহ্বায়ক ডা. শাহরিয়ারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। এভাবে সারা দেশে সরকার ত্রাস সৃষ্টি করছে।’’

সরকার ‘পুরনো কৌশলেই’ বিএনপির ওপর দমন পীড়ন চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এভাবে ‘একদলীয় শাসন কায়েমের চেষ্টা’ জনগণ মেনে নেবে না।

দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেখা যাচ্ছে না কেন– এমন প্রশ্নে রিজভী বলেন, “কেন্দ্রীয় নেতাদের যেসব স্থানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা সেখানেই আছেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আছেন। নেতারা নিষ্ক্রিয় এটা ঠিক নয়।”