তারেকের বিরুদ্ধে আরও পরোয়ানা

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আরও মামলা হয়েছে, যারমধ্যে তিনটিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2014, 09:28 AM
Updated : 24 Dec 2014, 11:02 AM

মঙ্গলবার ও  বুধবার মামলা হয় ফেনী, গাজীপুর, যশোর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও রাজশাহীতে। এরমধ্যে গাজীপুর ও নড়াইলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া নড়াইলে সোমবারও দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ হয়েছে।

ফেনীতে সমন

বুধবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকী এক হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলায় সমন জারির আদেশ দেন।

সমনে আগামী ৪ মার্চ তারেক রহমানকে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি দায়ের করেন আইনজীবী গাজী তারেক আজিজ।

গাজীপুরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গাজীপুরে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফারজানা আক্তার।

বুধবার গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তৌহিদুল ইসলাম দীপ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

গাজীপুর জজ আদালতের বিশেষ পিপি মো. শাহজাহান জানান, মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহ এবং ১০০ কোটি টাকা মানহানির অভিযোগ আনা হয়েছে। দুপুরে শুনানি শেষে তারেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়।

যশোরে তলব

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মানহানির এ মামলাটি করেছেন চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান কবীর।

জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিল্টন হোসেন অভিযোগ গ্রহণ করে তারেক রহমানকে আগামী ২১ জানুয়ারি আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে একই অভিযোগে যশোরের মুক্তিযোদ্ধা খয়রাত হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান আলী দুটি মামলা করেছেন।

গোপালগঞ্জের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ

গোপালগঞ্জে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার অভিযোগ তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

গোপালগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলাটি করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা এস এম নূর মোহাম্মদ দুলু।

জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলী আদালত-১ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত হাকিম বেগম ফারজানা আক্তার মামলাটি আমলে নিয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানাকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হল।

নড়াইলে ২ মামলায় পরোয়ানা

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নড়াইলে তিন দিনে দুইটি মামলা হয়েছে, যেগুলোতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও আদেশ হয়।

বুধবার কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাক্তন কমান্ডার শাহাজাহান বিশ্বাস বাদী হয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আরিফুল ইসলামের আদালতে একটি মামলা করেন।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন এবং আগামী ২৭ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

এর আগে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) নড়াইল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল মাহমুদ তুফান বাদী হয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সালেহুজ্জামানের আদালতে একটি মামলা করেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন এবং আগামী ১০ জানুয়ারি মামলার তারিখ ধার্য করেন।

রাজশাহীতে সমন জারি

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বুধবার রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার বলেন, বিচারক জয়ন্তী রানী দাস মামলাটি আমলে তারেক রহমানকে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

বিজয় দিবস উপলক্ষে গত ১৫ ডিসেম্বর তারেক লন্ডনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজাকার’ বলেন।

জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছেলে বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি ৭ মার্চ সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসারদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করতেন, তাহলে যে ‘সামান্য সংখ্যক’ পাকিস্তানি সৈন্য তখন ছিল, তাদের সহজেই পরাজিত করা যেত; প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক কমানো যেত।

তিনি দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু ‘পাকবন্ধু’ ছিলেন বলেই এমনটি করেননি। আর সে কারণে তাকে ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করা যায়।

একই আলোচনা সভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধুকে ‘শখের বন্দি’ আখ্যায়িত করে তারেক আরও দাবি করেন, যুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে হানাদার বাহিনীর আঁতাত ছিল।

তারেক রহমানের ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যে কয়েক ডজন মামলা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটিতে জারি হয়েছে পরোয়ানা।