ছেলের সঙ্গীতানুষ্ঠানে এরশাদের আবৃত্তি

ছেলে এরিকের একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানে শ্রোতা হিসেবে গিয়ে নিজের কবিতা আবৃত্তি করে শোনালেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2014, 05:18 PM
Updated : 22 Dec 2014, 05:27 PM

এরিক এরশাদ ও তার গানের শিক্ষক সঞ্জয় রায়ের যুগল সঙ্গীতানুষ্ঠান হয় সোমবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এরশাদ। বক্তব্যের জন্য মঞ্চে ডাকা হলে তিনি উঠেই বলেন, “উপস্থাপক আমার পরিচয় দিলেন সাবেক সেনাপ্রধান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে। আমি ভেবেছিলাম তিনি আমাকে বলবেন, সাবেক স্বৈরাচার। তা বলেননি, এজন্য তাকে ধন্যবাদ।”

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে এরশাদ স্বরচিত কবিতার কয়েকটি পঙক্তি আবৃত্তি করে শোনান।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সঙ্গীতশিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, সাদিয়া আফরিন মল্লিক, অনুষ্ঠানের আয়োজক সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আমরা সূর্যমুখী’র সমন্বয় সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।

বক্তব্যে এরশাদ বলেন, “আমি রাজনীতিবিদ নই, সৈনিক। রাজনীতিবিদদের মতো  কথা বলতে পারি না। রাজনীতিবিদের কথায় অনেক মিনিং থাকে। কিন্তু আমি যা মিন করতে চাই তা ই বলি।”

“এ কারণে হয়ত মনে হয় আমি একবার একটা কথা বলি, আরেকবার আরেকটা কথা বলি,” ঘন ঘন মত পরিবর্তনের ব্যাখ্যা দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

ছেলের গানের অ্যালবাম প্রকাশ অনুষ্ঠানে এইচ এম এরশাদ (ফাইল ছবি)

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় হতাশা প্রকাশ করে সমাজে এত অবক্ষয় নেমে এসেছে যে আলো কবে দেখব জানি না। শিক্ষাঙ্গন, রাজনীতি সব জায়গায় অবক্ষয়। সুন্দর পৃথিবী নেই। কারা যে আমাদের মুক্তি দেবে, কবে যে একটি সুন্দর সমাজ দেখতে পাব, জানি না।”

নব্বইয়ের পর দেশের শাসনক্ষমতায় আসা সবগুলো সরকারকেই নিজের চেয়ে বড় ‘স্বৈরাচার’ আখ্যায়িত করেন গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এই সামরিক শাসক।

“আমাকে স্বৈরাচার বলা হয়, কিন্তু আমি চলে যাওয়ার পর অনেক বড় স্বৈরাচারের জন্ম হয়েছে।”

নিজের শাসনামল অনেক ‘ভালো’ ছিল দাবি করে এরশাদ বলেন, “প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি, হত্যা-খুন, প্রতিপক্ষকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা- এসব নব্বইয়ের পরে শুরু হয়েছে। সেজন্য আমি মনে করি আমার সময় অনেক ভালো ছিল।”

“তবে যে যা ই বলুক আমার সম্বন্ধে, মানুষ আমাকে ভালোবাসে। সাধারণ গ্রাম বাংলার মানুষ কখনও আমার সম্পর্কে কোনো কটূ কথা বলেনি। আমি মানুষের ভালোবাসা নিয়ে মরতে চাই,” বলেন তিনি।