সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথি দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সরকারের মন্ত্রীরা আন্দোলনের নামে রাস্তায় নামলে হাত-ভেঙে দেওয়া হবে, গায়ের চামড়া তুলে নেওয়া হবে ইত্যাদি কথা বলছেন।
“আমরা তাদের স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, পুলিশ ছাড়া রাস্তায় নামুন, তখন কে কার গায়ের চামড়া তোলে কিংবা হাত-পা ভাঙে, সেটা জনগণই ঠিক করবে।”
সকালে পৌর মুক্তিমঞ্চে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, কবুতর, বেলুন উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশিদ। দীর্ঘ ছয় বছর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জেলার আটটি উপজেলার ৫ পৌরসভার ১৩টি ইউনিটের অর্ধশতাধিক কাউন্সিলর এবং সহস্রাধিক নেতাকর্মী সম্মেলন অংশ নেন।
সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। জনগণের সব অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে। ৫ জানুয়ারি মানুষজনকে তারা ভোট দিতে দেয়নি।
“ভোট ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা যেতে দেওয়া হবে না। আমাদের নেত্রী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। ইনশাল্লাহ আন্দোলন হবে। নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে এদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।”
বিচার বিভাগকে ‘পুলিশের চেয়েও ভয়ঙ্কর’ দাবি করে ফখরুল বলেন, “বিচার বিভাগে ন্যায় বিচার পাওয়া যায় না। এখন এমন বিচার বিভাগ পুলিশ বাহিনী থেকেও ভয়ংকর।
“এই বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দায়ের করা আট হাজার মামলা খারিজ করে দিয়েছে। বিচারের নামে এরকম প্রহসন জনগণ সহ্য করবে না।”
সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও এর ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন ফখরুল।
“আমরাও চাই, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হোক, যাতে তাদের আর ঘুষ খেতে না হয়। কিন্তু বাকি মানুষদের কী হবে? এদেশের কৃষক ও মধ্যবিত্ত মানুষজনের কী হবে? চালের দাম বেড়েছে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বেড়েই চলেছে, তাদের কী হবে ?”
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান মোল্লা কচির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জহিরুল হক খোকনের পরিচালনায় সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশিদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুশফিকুর রহমান, উকিল আবদুস সাত্তার, যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কয়েকজন নেতাও সম্মেলনে যোগ দেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে কাউন্সিলরদের নিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে কমিটি গঠন করা হয়।