‘রাজাকারদের দেশ ইজারা আর নয়’

নতুন বছরের শুরুতেই সরকার পতনের আন্দোলনের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের রাজপথে নামতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সরকারের দুই মন্ত্রী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2014, 11:56 AM
Updated : 19 Dec 2014, 11:56 AM

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, “জামায়াত-বিএনপিকে রাজপথেই নামতে দেওয়া হবে না। আপনি (খালেদা জিয়া) সেই দলের নেতা যারা হাওয়া ভবন বানিয়েছিলেন, জঙ্গিদের উত্থান ঘটিয়েছিলেন।”

আর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, “সিংহাসন দখল করতে খালেদা জিয়া রাজাকার-জঙ্গিদের হাতে দেশ ইজারা দিয়ে দেবেন, আমরা বেঁচে থাকতে তা হতে দেব না।”

গণতন্ত্রের জন্য নয়, খালেদা জিয়া জঙ্গিবাদী ও যুদ্ধাপরাধীদের জন্য কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করেন জাসদ সভাপতি ইনু।

শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে গণতন্ত্রী পার্টির জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননও বক্তব্য দেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আন্দোলনের হুমকির ভাষা রাজনৈতিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

আগের দিন রাজধানীতে এক কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, “এ বিজয়ের মাস শেষে যে কোনো সময়ে আমি আন্দোলনের ডাক দেব, তোমরা প্রস্তুত হও।”

বর্তমানে বিএনপিতে থাকা নব্বইয়ের ছাত্রনেতাদের কনভেনশনে বর্তমান সরকারকে ‘জালেম’ আখ্যায়িত করে সরকার হটাতে সবাইকে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান বিএনপি প্রধান।

“ওদের বিতাড়িত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে,” বলেন তিনি।

খালেদার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিম বলেন, “হুমকি দেবেন না, ভয় দেখাবেন না। আমরা মুক্তিযোদ্ধার দল। জীবন দিয়ে যুদ্ধ করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি। ভয় দেখান কেন?”

আন্দোলন রুখতে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। রাজাকার হুমকি দিয়েছে প্রস্তুত হয়ে যান। পাড়া-মহল্লা, গ্রামে-গঞ্জে, রাজপথে যুবক থাকবে। বিএনপির চিহ্নও খুঁজে পাওয়া যাবে না।”

‘খালেদা জিয়া পাকিস্তানের ভাষায় কথা বলেন’ মন্তব্য করে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিম বলেন, “এটা জনগণের ভাষা নয়। পাকিস্তানে দেখুন কীভাবে শিশুদের হত্যা করা হয়েছে।

“রাজাকারদের দল নিয়ে আপনি (খালেদা জিয়া) বসে আছেন। ২০১৯ সালের এক দিন আগেও নির্বাচন হবে না। নির্বাচনের ট্রেন মিস করেছেন, এখন এর মাশুল দিচ্ছেন, পাঁচ বছর অপেক্ষা করুন।”

পরবর্তী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ১৪ দলের সমন্বয়ক নাসিম।

সেই বিজয় আনতে ১৪ দলের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

নাসিম বলেন, “গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে দেশে মার্শাল ল’ জারি হত, গণতন্ত্র থাকত না। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েও শেখ হাসিনা নির্বাচন করেছেন।”

গণতন্ত্রী পার্টির সম্মেলন আগামী দিনে ১৪ দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মেনন।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১৪ দলভুক্ত অন্য কয়েকটি দলের নেতারাও বক্তব্য দেন।