খুনি আপনি: খালেদাকে এরশাদ

বিএনপির দুই দফা শাসনামলে গাইবান্ধায় সারের এবং কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে সৌধ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।

নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2014, 03:45 PM
Updated : 17 Dec 2014, 03:45 PM

রোববার রাজধানীর কাকরাইলে দলের এক জনসভায় তিনি বলেন, “খালেদা আমাকে খুনি বলেন। আমি তাকে বলতে চাই, গাইবান্ধায় সারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর গুলি চালিয়ে ১৮ জনকে হত্যা করেছিলেন।

“কানসাটের মানুষজন বিদ্যুৎ চাইলে সেখানেও গুলি চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করেছেন। এদের সবার নাম আমার কাছে আছে। সুযোগ পেলে এই দু’টি জায়গায় নিহতদের উদ্দেশ্যে আমরা স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করব। সেখানে লেখা থাকবে- বিএনপির দুঃশাসনের শিকার।”

বিজয় দিবস উপলক্ষে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়, যাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা উদ্দেশ্য করে এরশাদ বলেন, “ক্ষমতায় এসে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করেছিলেন। জেএমবি, বাংলা ভাইকে সৃষ্টি করেছিলেন।

“৬৪টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা করেছেন। বিচারকদের হত্যা করেছেন। ২১ অগাস্ট বোমা হামলা করে দেশের প্রেসিডেন্টের স্ত্রীকে হত্যা করেছেন।”

এরশাদ তাকে খুনি বলার আগে ‘আয়নায় নিজের চেহারা’ দেখতে বিএনপি চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দেন।

“আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন, কার হাতে রক্তের দাগ লেগে আছে। আপনাদের আমলের সব হত্যা-খুনের হিসাব আমরা নেব। হিসাব আমাদের নিতে হবে। তখন বলব- খুনি এরশাদ নয়, আপনি।”

খালেদা জিয়া সম্প্রতি এক সমাবেশে বলেন, তার স্বামী জিয়াকে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় হত্যা করার ষড়যন্ত্রে তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদও ছিলেন।

তার জবাবে এরশাদ রাষ্ট্রপতি জিয়া হত্যাকাণ্ডের সময় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে তার পাশের কক্ষে থাকা বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে ইঙ্গিত করে বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার পরও এই হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার করেনি।      

জনসভায় এরশাদ বিএনপি চেয়ারপারসনের উদ্দেশে বলেন, “মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন...লেভেল প্লেইং ফিল্ডের কথা বলেন। তখন গণতন্ত্র কোথায় ছিল, লেভেল প্লেইং ফিল্ড কোথায় ছিল, যখন আমাকে-আমার দলের কর্মীদের জেলে পাঠিয়েছিলেন, মিটিং-মিছিল করতে দেননি।” 

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এই সামরিক শাসক পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করে বলেন, “জনগণ আর দুই দলকে দেখতে চায় না। তারা মুক্তি চায়, পরিত্রাণ চায়। আবার যদি আসতে পারি, আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

“কারণ জাতীয় পার্টি জেগে উঠেছে, দুঃশাসন-সন্ত্রাসের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করবো। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করব। দেশে সেই পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করব, যা দেখে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা শান্তি পাবে।”

আগামী ১ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১ লাখ লোকের উপস্থিতিতে জাতীয় পার্টি সমাবেশ করবে বলেও ঘোষণা দেন এরশাদ।

জনসভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা,  এম এ হান্নান।