‘আন্দোলনে জোয়ার-ভাটা চলছে, সফলতা আসবে’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনে ‘উত্থান-পতন’ চললেও এর সফলতার ব্যাপারে আশাবাদী আবদুল্লাহ আল নোমান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2014, 09:30 AM
Updated : 17 Dec 2014, 10:18 AM

দেশের পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে জনগণ আর ‘চুপ’ করে বসে থাকবে না বলেও মনে করছেন বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান।

বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “গত বছরের ৫ জানুয়ারি জনগণের ইচ্ছায় নির্বাচন হয়নি। ওই নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে যায়নি। অবৈধভাবে সংসদ ও সরকার গঠন করে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে গণতন্ত্র লেশ মাত্র নেই।

“এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে। দেশ যেভাবে এগোচ্ছে, জনগণ আর চুপ করে বসে থাকবে না।”

সরকার জনগণ থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়েছে দাবি করে নোমান বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ অস্ত্রধারীরা নিয়ে তারা ঘুরছেন, চলছেন।

“প্রতিটি আন্দোলনে নিরস্ত্র জনগণ ইটের টুকরা ও বাঁশের লাঠি নিয়ে অস্ত্রধারীদের সঙ্গে লড়াই করে বিজয় হয়েছে। এবারও তারা ওইসব অস্ত্রধারীদের পরাজিত করবে।”

সরকার হটানোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবিতে জনগণ লড়াই করছে। এই আন্দোলনের জোয়ার-ভাটা হচ্ছে। এতে সফলতা আসবেই।”

৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালনের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা নোমান বলেন, “এই দিনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি, এজন্য এই দিনটিকে আমরা কালো দিবস হিসেবে পালন করব। গোটা জাতি এই দিনকে কালো দিবস হিসেবে চিহ্নিত করেছে।”

জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ‘একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের প্রেক্ষাপটে’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নোমান বলেন, “পাকিস্তানিরা আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। দেশের স্বাধীনতার পর এখন যেভাবে গুম-গুপ্ত হত্যা করে মানুষ খুন করা হচ্ছে তা একাত্তরকেও ছাড়িয়ে গেছে।”

বক্তব্যে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেন নোমান।

তিনি বলেন, “একাত্তর সালে অনেকে অনেক ঘোষণা দিয়েছেন। তবে মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন মেজর জিয়াউর রহমান। জিয়া আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলে দেশ স্বাধীন হত না। গৃহযুদ্ধের দিকে দেশ চলে যেত।”

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিব বাহিনী গঠনের সমালোচনা করে নোমান বলেন, “মুজিব বাহিনী গঠন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেই দ্বন্দ্ব হয়েছিল। প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদও এ্ই বাহিনীর বিপক্ষে ছিলেন।

“এজন্য ওই সময়ে তিনি দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে দেখার পর থেকে তাজউদ্দিন সাহেব আর মুজিব বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেননি। কারণ ওই মুজিব বাহিনীর শক্তি ছিল দিল্লী।”

সংগঠনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুর রহমান দুদু, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সা্ইদুর রহমান প্রমূখ বক্তব্য দেন।