জিয়া হত্যার বিচার চান এরশাদও

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছেন সাবেক সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ, যিনি নিজেই ওই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য নায়ক বলে বিএনপি অভিযোগ করে আসছে। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2014, 02:47 PM
Updated : 14 Dec 2014, 04:44 PM
রোববার রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এরশাদ বলেন, “খালেদা জিয়া আমাকে নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। আমি বলতে চাই, আপনারা তিন বার ক্ষমতায় ছিলেন। কেন বিচার করেন নি?”

“বিচার একবার শুরু হয়েছিলো। শেষ হয় নি কেন? প্রয়োজনে আবার বিচার শুরু করুন। আমরাও জিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ১ মে এক সমাবেশে বলেন, ১৯৮১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াকে হত্যা করেছিলেন তখনকার সেনাপ্রধান এরশাদ।

ওই সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, “এরশাদ মেজর মঞ্জুর ও জিয়াউর রহমানের খুনি।”

এরপর ১০ মে জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন জাতীয় যুব সংহতির এক সমাবেশে এরশাদ বলেন, “আমি জানি, দেশবাসী জানে জিয়ার খুনি কে?

“ওইদিন জিয়ার পাশের কক্ষে কে ছিলেন? তার সঙ্গে খালেদা জিয়া ২০ বছর রাজনীতি করেছেন কিন্তু বিচার করেন নি।”

১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। হত্যার দিন জিয়ার পাশের কক্ষেই বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব বদরুদ্দোজা চৌধুরীও ছিলেন। ওই অভ্যুত্থানে জড়িত অভিযোগে আটক মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে এর পরপরই হত্যা করা হয়।

ওই সময়ে সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থাকা এরশাদ পরে সামরিক আইন জারি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। অন্যদিকে জিয়ার মৃত্যুর পর রাজনীতিতে এসে বিএনপির হাল ধরেন তার স্ত্রী খালেদা।

এরশাদের বক্তব্যের একদিন পর ১১ মে সাবেক বিএনপি নেতা ও বর্তমানে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী প্রতিবাদ করে এক বিবৃতি দেন, যাতে তিনি এরশাদকে ‘সহজাত মিথ্যাবাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।

অবশ্য বদরুদ্দোজার বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ১২ মে এরশাদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমি আমার বক্তব্যে কারো নাম উল্লেখ করিনি। তিনি কেন এটাকে ব্যক্তিগতভাবে নিলেন, তা আমার বোধগম্য নয়।”

সাধারণ আদালতে জিয়া হত্যার বিচার না হলেও মঞ্জুর হত্যা মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে এসেছে। এরশাদকে আসামি করে দায়ের করা এই মামলায় রায়ের দিন ঠিক হওয়ার পর এখন পুনরায় অধিকতর তদন্ত চলছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক এরশাদ নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি বিএনপিবিহীন দশম সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসার পাশাপাশি সরকারেও যোগ দিয়েছে। এরশাদ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত।