নাজমুল হুদার নতুন দল

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বিএনএফ গঠনের পর এর কর্তৃত্ব হারিয়ে ফেলা নাজমুল হুদা নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।  

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2014, 06:53 AM
Updated : 29 Nov 2014, 10:08 AM

শনিবার রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘জাতীয় মানবাধিকার পার্টি’ নামে নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেন তিনি।

গত বছর বিএনএফের কর্তৃত্ব হারানোর পর বিএনপিতে ফেরার আগ্রহ নিজ থেকে জানিয়েছিলেন সাবেক এই মন্ত্রী। তবে সংবাদ সম্মেলনে নিজের পুরনো দলের সমালোচনায় মুখর ছিলেন তিনি।

বিএনপির প্রতি ‘দুর্বলতা’ রয়েছে স্বীকার করলেও ফেরার সম্ভাবনা নাকচ করে নাজমুল হুদা বলেছেন, তিনি এখন আর ‘অসুস্থ রাজনীতির’ অংশ হতে চান না।

“বিএনপি অহিংস রাজনীতির পলিসি নিয়েছিল যখন, তখন তাদের সঙ্গে ছিলাম। বিএনপি একের পর এক ভুল করে যাচ্ছে, এজন্যই দলটির এই দৈন্য দশা। মুখে আন্দোলনের কথা বললেও তারা মাঠে নামেনি।”

বিএনপিতে যোগ্যদের নেতৃত্বে আনা হচ্ছে না দাবি করে দলটির সাবেক এই ভাইস চেয়ারম্যান আলাদাভাবেই রাজনীতি করার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন।

নতুন দল গঠনের কারণ ব্যাখ্যা করে নাজমুল হুদা বলেন, “বাংলাদেশে এখন দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক জোট আছে। তৃতীয় জোট হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স। এই তৃতীয় জোটের চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করবে মানবাধিকার পার্টি।”

১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থাসহ দেশের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যেসব সংগঠন কাজ করছে তাদের নিয়ে দল গঠন করতে চান বলে জানান তিনি।

নাজমুল হুদার স্ত্রী সিগমা হুদা বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার কর্ণধার।

মানবাধিকার কমিশনকে ‘কাগুজে বাঘ’ আখ্যা দিয়ে নাজমুল হুদা বলেন, “তারা যদি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চায় তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।”

বিএনপির মতো আগাম নির্বাচনের দাবি জানাবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা মধ্যবর্তী নির্বাচনের তাগিদ অনুভব করছি না। মানবাধিকারের পক্ষে জনমত তৈরি করে আমরা নিজেদের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করব এবং আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।”

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের উৎখাত চান কি না- এ প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হুদা বলেন, “বর্তমান সরকার উৎখাত নয়, তাদের কাছ থেকে উদ্দেশ্য পূরণ করতে চাই।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের লোগোই ‘মানবাধিকার পার্টি’ লোগো হিসেবে ব্যবহার করবে এবং এই দলের প্রতীক হবে পাটের সোনালি আঁশ।  

বিএনএফ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “জটিলতা তৈরি করতে চাইলে ছেড়ে দেব না।”

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর বিএনএফের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলেও পরে দলটির মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ পরে দলটির কর্তৃত্ব নেন।

দুজনে দুজনকে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার করলেও নির্বাচন কমিশন আবুল কালামের নেতৃত্বাধীন দলটিকেই স্বীকৃতি দেয়। বিএনপিবিহীন দশম সংসদে আবুল কালাম এখন সংসদ সদস্য।

বিএনপি থেকে কয়েক দফায় বহিষ্কৃত হয়ে আবার ফিরে যাওয়ার নজিরও রয়েছে দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন এই নেতার।