‘রক্তনেশায় মত্ত ক্ষমতাসীনরা’

সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের ওপর চরম দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2014, 05:57 PM
Updated : 23 Nov 2014, 05:57 PM

এর পরিণতি ভালো হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

রোববার রাতে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেন, “মানুষের রক্তনেশায় আওয়ামী লীগ আজ উন্মাদ হয়ে গেছে। তারা যেখানে যাকে পাচ্ছে তাকে হত্যা করছে। এরা ড্রাকুলার মতো রক্ত শোষণে মত্ত হয়ে উঠেছে।

“কেবল তাই নয়, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সরকারের নানাবাহিনী যুক্ত হয়ে টাকার বিনিময়ে মানুষ গুম করছে, মানুষ হত্যা করছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, এর পরিণতি হবে অত্যন্ত খারাপ। এদের এতো কঠিন পরিণতি হবে যে, তাদের মৃত্যুতে ইন্নালিল্লাহ পড়বে না।”

এ পরিস্থিতিতে নেতা-কর্মীদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার পরামর্শ দেন খালেদা জিয়া।

রাতে গুলশানে নিজের কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত গফরগাঁও পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইবনে আজাদ কমলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতে এসব বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কমলের বাবা আবুল কালাম, মা নুরুন্নাহার ও স্ত্রী খাদিজা খানমকে সান্ত্বনা দিয়ে তাদের ৮ লাখ টাকা অর্থ সহায়তা দেন তিনি।

গত ৮ সেপ্টেম্বর গফরাগাঁওয়ে দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন কমলকে, যার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করছেন তার দলের নেতারা।

সম্প্রতি সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, “দেশে আজ কোনো সরকার বলে কিছু নেই। দেশে আইনের শাসন নেই। আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ দেখেও দেখে না।

“বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাঙ্গনগুলো এখন সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেমন নিরাপদ নয়, তেমনি শিক্ষকরাও আজ নিরাপত্তাহীনতায় মধ্যে আছেন।”

গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তিনমাসে ৩১০জন নেতা-কর্মীকে খুন এবং ৬৫ জনকে গুম করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

“তারা (সরকার) গুম ও খুন নীতি অনুসরণ করেছে। এভাবে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না,” বলেন তিনি।

সরকারবিরোধী আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “জনগণ ও বিএনপি মনে করে, আন্দোলনের মাধ্যমে নরপিশাচ আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় হবে, দেশে আবার গণতন্ত্র ফিরে আসবে। মানুষ তার ভোটের অধিকার ফিরে পাবে।”

দেশে বর্তমানে ন্যায়বিচার বলতে কিছু নেই- মন্তব্য করে বিএনপি নেত্রী বলেন, “আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার বলে আজ কিছু নেই। ন্যায়বিচার থাকলে আওয়ামী লীগের জন্য এক রকম এবং বিএনপির জন্য অন্য রকম বিচার হত না। বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দী করা হচ্ছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ফাঁসির আসামিরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।”

অনুষ্ঠানে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গফরগাঁও উপজেলা সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, জেলা ছাত্রদল সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন বক্তব্য রাখেন।

এ সময়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম মোশাররফ হোসেন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শামীমুর রহমান শামীম, জেলা সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব আখন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।