যুবলীগের সেই সমাবেশেই মারামারি

চট্টগ্রামে যে সমাবেশের মঞ্চ থেকে নেতারা যুবলীগকে ‘সেরা যুব সংগঠন’ অভিহিত করে তাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের অপপ্রচারের সমালোচনা করেন, সেই সমাবেশেই মারামারিতে জড়াতে দেখা গেল সরকার সমর্থক সংগঠনটির কর্মীদের।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2014, 03:25 PM
Updated : 22 Nov 2014, 07:08 PM

শনিবার বন্দর নগরীর জিইসি মোড়ের একটি কনভেশন সেন্টারে ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘যুব জাগরণ’ অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খল কর্মীদের থামাতে যুবলীগের নেতাদেরও হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়।

বিশৃঙ্খলার বিষয়টি সমাবেশে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বক্তব্যেও এসেছে, তবে ভিন্নভাবে।

নিজের সংগঠনের কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “এই যে আজকের অনুষ্ঠান। এত অর্জন। তারা (গণমাধ্যম) লিখবে, কোথায় একটু ‍ধাক্কাধাক্কি হয়েছে সেটা।

“আমি মনে করি সমালোচনা প্রশংসার নামান্তর। কিন্তু তাদের কাছে শুধু বিসর্জন পাবেন, অর্জন পাবেন না। নেতিবাচক সংবাদই তাদের কাছে সংবাদ, ইতিবাচকটা নয়।”

দুপুরে এই সমাবেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় কর্মীদের সামলাতে নেতাদের হিমশিম খেতে দেখা গেছে।

বিভিন্ন নেতার অনুসারীদের মধ্যে হাতাহাতি, চেয়ার নিয়ে তেড়ে যাওয়া ও সম্মেলন কেন্দ্রের কাচের দরজা ভাঙার ঘটনা ঘটেছে সাংবাদিকদের চোখের সামনেই।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আগ্রাবাদ, লালখান বাজার ও পাহাড়তলী ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে মিলনায়তনে ঢোকে।

এরপর তারা নিজ নিজ ওয়ার্ডের ব্যানার মঞ্চের পাশে রাখার প্রতিযোগিতায় নামলে এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এক পক্ষ চেয়ার নিয়েও তেড়ে যায় অন্য পক্ষের দিকে।

এসময় যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এরপর নাম ঘোষণা করে নেতাদের মঞ্চে আহ্বান শুরু হয়। এক পর্যায়ে একাধিক হত্যা মামলার আসামি যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের নামও ঘোষণা করা হয়। তবে তিনি মঞ্চে ওঠেননি।

অনুষ্ঠান শুরু হলে যুবলীগ নেতা শাখাওয়াত হোসেন বাবুল, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও নুরুল আবছার চৌধুরীর অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি স্লোগানের কারণে অতিথিদের বক্তব্য প্রায় শোনাই যাচ্ছিল না। 

স্লোগানের কারণে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের বক্তব্য কিছুই শোনা যায়নি।

অতিথিদের বক্তব্য চলাকালে নগর যুবলীগ আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমদুসহ আট-দশজন নেতা স্লোগানদাতাদের থামানোর চেষ্টা করে গলদঘর্ম হন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্য দেওয়ার সময় স্লোগানের কারণে একবার থেমে যান। পরে স্লোগান থামলে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

বক্তব্যে আশরাফ যুবলীগ গঠনের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, “সময়ের পরিক্রমায় যুবলীগ আজ বাংলাদেশের যুবকদের শ্রেষ্ঠ সংগঠন।”

অনুষ্ঠান শেষে সৈয়দ আশরাফ বেরিয়ে যাওয়ার সময় তার পিছে পিছে প্রায় হাজার খানেক নেতা-কর্মী অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় কনভেনশন সেন্টারের একটি কাঁচের দরজা ধাক্কাধাক্কিতে ভেঙে যায়।

এছাড়া এই সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের বহনকারী যানবাহন ও মিছিলের কারণে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ জিইসি মোড়ে বেলা ১১টার দিকে যানজটের সৃষ্টি হয়, যা প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলছিল।