তারেককে নেত্রীর পাশে দেখতে চাই: ফখরুল 

বর্তমান সরকারকে হটিয়ে তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর পথ তৈরিতে নেতা-কর্মীদের সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2014, 05:38 PM
Updated : 19 Nov 2014, 07:35 PM

দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেকের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভা হয়।

তারেকের মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি কোনো বক্তৃতা না দিয়ে দর্শক সারিতে বসে সবার বক্তব্য শোনেন।

বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “তারেক রহমানকে আর আমরা দূরে দেখতে চাই না। আমাদের নেত্রীর পাশে তাকে দেখতে চাই।

“আমাদের বসে থাকার আর সময় নেই। তারেক রহমানের জন্মদিনে শপথ হোক- শেখ হাসিনার জালেম সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনে আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।”

অনুষ্ঠানের শুরুতে তারেকের সুস্থতা ও দীর্ঘজীবন কামনা করে মোনাজাত করা হয়। পরে তারেকের রাজনীতি ও লন্ডনে তার কর্মকাণ্ডের ওপর নির্মিত দুইটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।

১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর তারেক রহমান বগুড়ায় জন্ম নেন। তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে।

২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা মাথায় নিয়ে এখন সপরিবারে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন তারেক। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে পরের বছরই লন্ডন যান তিনি।  

তারেকের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ মামলা হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, “দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের যে পতাকা শহীদ জিয়াউর রহমান বহন করছেন, যা এখন দেশনেত্রী বহন করছেন, সেই পতাকাই তারেক রহমান বহন করছেন। সেজন্য সব ষড়যন্ত্র তাকে নিয়ে।”

“আমরা যদি সত্যিকার অর্থে তারেক রহমানকে ভালোবাসি, তাহলে এই জালেম সরকারকে হটিয়ে দেশে একটি জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জন্মদিনের তাকে যদি আমরা কিছু উপহার দিতে চাই, সরকার হটানোই হবে বড় উপহার,” নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন তিনি।

ফখরুলের সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, সাংবাদিক শফিক রেহমান, শওকত মাহমুদও বক্তব্য রাখেন।

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন বলেন, “লন্ডনের কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে তারেক রহমান যেসব বক্তব্য রেখেছেন, আমি আশা করছি, আগামী মাস তিনেকের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই কথাগুলো তিনি বলবেন।”

তারেককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রবিজ্ঞানের যদি যর্থাথতা থাকে, আমার চিন্তাভাবনা যদি ঋজু হয়, তাহলে মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে দেশের চেহারা এমন থাকবে না। মাঝখানের সময়টাতে আন্দোলনে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়বে। আমরা ছাত্রতুল্য তারেক রহমানের নতুন দিনের অপেক্ষায় আমি রইলাম।”

অধ্যাপক মুস্তাহিদুর রহমান বলেন, “তারেক রহমান কেবল নেতা নন, তিনি এদেশের স্বপ্ন দ্রষ্টা। তিনি আমাদের মাঝে না থাকলেও তিনি এদেশের মানুষ কাছে সরব হয়ে আছেন।”

বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, রুহুল কবির রিজভীও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

হান্নান শাহ বলেন, “আমাদের ম্যাডাম যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তারেক রহমান সরকারি তহবিল থেকে ২টা টাকাও কোনোদিন খরচ করেনি। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সুপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় মন্ত্রী পদমর্য্দায় প্রতিমাসে ২ লাখ ডলার বেতন নিচ্ছেন। এরকম বেতন রাষ্ট্রপতিও পান না।

“এভাবে দেশের অর্থ বিদেশে যাচ্ছে, এজন্য মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা যায়। আগামীতে তা কার্য্কর করা হবে।”

মির্জা আব্বাস বলেন, “ক্ষমতাসীনরা বলছে, তারেক রহমান ফেরারী। আমি বলতে চাই, তারেক রহমান ফেরারী নন, তিনি লন্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি যখন সুস্থ হয়ে দেশে ফিরবেন, সরকারের তখতে তাউস ভেঙে যাবে।”

অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা আর এ গনি, জমিরউদ্দিন সরকার, সেলিমা রহমান, আহমেদ আজম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আমানউল্লাহ আমান, বরকতউল্লাহ বুলু, মিজানুর রহমান মিনু, মাহবুবউদ্দিন খোকন, ফজলুল হক মিলন, হারুন-অর রশীদ, নুর মোহাম্মদ খান, নিতাই রায় চৌধুরী, আসাদুজ্জামান রিপন, আবদুস সালাম, খায়রুল কবীর খোকন, নাজিমউদ্দিন আলম, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিবউন নবী খান সোহেল, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, হাফেজ আবদুল মালেক, মীর সরফত আলী সপু, শফিউল বারী বাবু, এমএ মালেক, মনির খান উপস্থিত ছিলেন।

কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, ডিএল’র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি মিত্র দলগুলোর নেতারাও ছিলেন বিএনপির এই অনুষ্ঠানে।