যুদ্ধাপরাধের সব রায় কার্যকর করব: হাসিনা

বর্তমান সরকারের আমলেই যুদ্ধাপরাধের সব রায় কার্যকরের কথা আবার বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2014, 11:02 AM
Updated : 3 Nov 2014, 06:11 PM

সোমবার জেলহত্যা দিবসে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় একথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর এই বক্তব্যের আগেই এদিন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মো. কামারুজ্জামানের আপিলে তার মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় হয়।

যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন, আমরা তাদের বিচার করছি। 

“এই মাটিতে সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে, এটা আমার ওয়াদা। বিচারের রায় যা হয়েছে, তা কার্যকর করে বাংলার মাটিকে অভিশাপমুক্ত করব, ইনশাল্লাহ।”

বঙ্গবন্ধু হত্যামামলার রায় কার্যকর নিয়েও অনেক হুমকি মোকাবেলা করতে হয়েছিল জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, সে রকমই সব প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে যুদ্ধাপরাধের রায় কার্যকর করা হবে।

“আমাদের ওয়াদা ছিল জনগণের কাছে- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা করব। অনেক হুমকি ধমকি...অনেক কিছু এসেছে। কিন্তু আপনারা জানেন, বিচার হয়েছে এবং আল্লাহর রহমতে বিচারের রায় আমরা কার্যকর করতেও সক্ষম হয়েছি।”

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে গত মেয়াদের শেষ দিকে চূড়ান্ত রায়ের পর জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

চলতি বছরের শুরুতে শেখ হাসিনা নতুন মেয়াদে ক্ষমতা নেওয়ার পর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর চূড়ান্ত রায় হয়েছে। তাতে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

এছাড়া যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে কারাভোগের মধ্যে গোলাম আযম ও আব্দুল আলীমের মৃত্যু হয়েছে।

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডের সাজা নিয়ে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদ ও কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেম আলী, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কারাবন্দি রয়েছেন।

ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে তাদের আপিলের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত রায় আসবে। ওই রায়ের পরই গত বছরের ডিসেম্বরে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল।     

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় পাওয়ার মধ্য দিয়ে শহীদ পরিবারগুলোর মানবাধিকার সুরক্ষিত হচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “যারা বছরের পর বছর এই বিচারের জন্য অপেক্ষা করেছেন, তারা অন্তত ন্যায়বিচার পেলেন। তাদের মানবাধিকার সুরক্ষিত হল।

“যারা আপনজন  হারিয়েছে, যে স্বামী হারিয়ে বিধবা হয়েছে, যে পিতা হারিয়েছে, সন্তান হারিয়ে সন্তানহারা হয়েছে। অন্তত তারা সান্ত্বনা পাবে যে তারা জীবনদ্দশায় দেখে গেল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলার মাটিতে হয়েছে। তারা ন্যায়বিচার পেয়েছে।”

ট্রাইব্যুনালে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দণ্ডের প্রতিবাদে জামায়াত প্রতিবারই হরতাল ডেকে আসছে। নিজামী, মীর কাসেম ও কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহজুড়েই হরতাল ডেকেছে দলটি।     

শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে জামায়াত হরতাল দেয়। কেন? তারা যখন মানুষ খুন করেছিল, মা-বোনের ইজ্জত লুটেছিল, গণহত্যা চালিয়েছিল, ওই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল সে সময় মনে ছিল না?”

জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক মিত্রতার দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভনেত্রী বলেন, “ওনার (খালেদা জিয়া) জন্য জামায়াত হয়ে গেছে এখন সাপের ব্যাং গেলার অবস্থা। না পারেন এদের পক্ষে বলতে, না পারেন এদের বিপক্ষে বলতে।”