জনসমর্থন পেতে হলে দলীয় অবস্থান খোলাসা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি।
শুক্রবার রাজধানীর বনানী মাঠে জাতীয় পার্টির (উত্তর) ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জি এম কাদের বলেন, “জাতীয় পার্টি এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত শক্তিশালী রাজনৈতিক দল। গ্রাম-গঞ্জ, ইউনিয়নসহ দেশের প্রতিটি পর্যায়ে জাতীয় পার্টির কিছু না কিছু সমর্থন আছে।
“কিন্তু সমস্যা হলো-এই জনসমর্থন কিছুটা এলোমেলো অবস্থায় রয়েছে। আমরা সুস্পষ্টভাবে জনগণের সামনে আমাদের রাজনীতি পৌঁছাতে পারিনি।”
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দ্বিতীয় দলীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একথা বললেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদের। গত আওয়ামী লীগ সরকারে তিনি মন্ত্রিসভায় থাকলেও এবার সংসদে নেই।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন এরশাদ। দলের যে সব নেতা-কর্মী সে সময় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলেন, তাদের মধ্যে জি এম কাদের ছিলেন অন্যতম।
এরপর নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে এরশাদ নির্বাচিত হলেও জিএম কাদেরের ক্ষেত্রে তা্ হয়নি।
সম্প্রতি জাতীয় তাঁতী পার্টির এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে কাদের বলেন, “সরকারের মন্ত্রণালয়ে থেকে যথাযথ বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করা যায় না। বিরোধী দল হতে হলে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে।”
নির্বাচনের পর প্রথম দলীয় সভায় অংশ নিয়ে কাদের ওই কথা বলার পর দৃশ্যত ক্ষুব্ধ জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু আসন ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন।
এদিনও ওই দিকে ইঙ্গিত করে জিএম কাদের বলন, “সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান নিতে হবে। রাজনীতিতে কেউ কাউকে ছাড় দেয় না। আমাদের মনে রাখতে হবে, যারা ক্ষমতায় আছে তারা আমাদের এমন সুযোগ কখনো দেবে না, যাতে আমরা ক্ষমতায় যেতে পারি। নিজের শক্তি নিজের তৈরি করতে হবে।”
জি এম কাদেরের পর জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বর্তমান পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বক্তব্য দেন।
সর্বশেষ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বলেন, “জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে বারবার ষড়যন্ত্র হয়েছে। ছয় বছর জেলে ছিলাম। কিন্তু মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা আরো শক্তিশালী হয়েছি।
“এর কারণ জনগণ আমাদের ভালবাসে। জনগণের ভালবাসা আছে বলেই জাতীয় পার্টি আবার জেগে উঠেছে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। জনগণ এই দুই দলের শাসন থেকে মুক্তি চায়। একমাত্র জাতীয় পার্টিই সেই মুক্তি দিতে পারে।”
সভায় অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এ হান্নান, এস এম ফয়সল চিশতী, যুগ্ম মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।