মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঘটা করে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেছেন। হোয়াট ইজ দ্য নিট রেজাল্ট? রেজাল্ট হচ্ছে- সেখানে আগে থেকেই নারী গৃহকর্মী নেওয়া হতো, তা চলবে। কিন্তু শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে কোনো চুক্তি হয়নি। অর্থাৎ আরব আমিরাতে প্রধানমন্ত্রীর সফর ফেল হয়েছে।’’
২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর আমিরাতে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে সাজাপ্রাপ্ত আসামি স্থানান্তর, নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতা এবং ঢাকায় আমিরাতের দূতাবাসের জন্য প্লট দেওয়ার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে তিনটি চুক্তি হয়।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া আরো সহজ করতে আগামী বছরের শুরুতে ঢাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাসে একজন লেবার অ্যাটাশে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগের কথাও জানিয়েছে দেশটির সরকার।
আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে গেলে ‘সাকসেস সাকসেস’ বলে তার ফটোসেশনের ছবি গণমাধ্যমে ছাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ দেশের মানুষের ক্ষতি রোধে তারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। সরকারকে বলব, মানুষজনকে শান্তিতে বসবাস করতে দিন, নইলে অতীতেও কেউ পার পায়নি, আপনিও পাবেন না।’’
এই বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, ‘মিথ্যা মামলার দিয়ে’ তার দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিচার বিভাগ, প্রশাসনসহ সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে সরকার দেশে ‘একদলীয় শাসন ব্যবস্থা’ কায়েম করতে চাইছে।
“মামলা, মামলা, মামলা। এমন কোনো ইউনিয়ন নেই মামলা হয়নি। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ছয়টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের সাড়ে ৭ হাজার মামলা তুলে নিয়েছে সরকার।”
এই পরিস্থিতিতে ‘আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই’ মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই দানব সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সবাইকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে।”
২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘২৮ অক্টোবর ট্র্যাজেডি-২০০৬: রুখে দাঁড়াও আওয়ামী জাহেলিয়াত’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
২০০৬ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পরপরই রাজপথে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়ায় বিবাদমান রাজনৈতিক পক্ষগুলো। ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে ১৪ দলীয় জোট ও জামায়াতে ইসলামীর সংঘর্ষে উভয়পক্ষে ১৩ জন নিহত হয়।
ওই ঘটনার স্মরণে দিনটিকে ‘২৮ অক্টোবর ট্র্যাজেডি’ দিবস হিসাবে পালন করে বিএনপি ও শরিকরা।
আলোচনার শুরুতে ওই দিনের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার লুৎফর রহমান আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।