আওয়ামী লীগ নিজেরাই শেষ হয়ে যাবে: খালেদা

‘জনবিচ্ছিন্ন’ আওয়ামী লীগকে জনগণই ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেবে বলে দলীয় নেতা-কর্মীদের আশ্বস্ত করে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য তাদের এক থাকতে বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2014, 05:39 PM
Updated : 27 Oct 2014, 05:45 PM

‘বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নেই’ বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার দলের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে একথা বলেন তিনি। 

খালেদা বলেন, “তারা ( সরকার) জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এমন এক সময় আসবে, আমাদের হাত দিতে হবে না, কিছু করতে হবে না। জনগণই তাদের গণধোলাই দেবে।

“তাই সবাইকে বলব, আর কোনও গ্রুপিং না করে, জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগ এক ঘরে হয়ে যাবে।”

খুনিদের সঙ্গে কিসের সংলাপ- শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, “উনার ডানে-বামে কারা, জিজ্ঞেস করুন। এরশাদ এক খুনি, ইনুরা আরেক খুনি। এসব বই পুস্তকে আছে। আবার ইনু একসময়ে বলেছে, তাদের অনেক লোকজনকে আওয়ামী  লীগ সরকার খুন করেছে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে দাবি করে তার জন্য প্রস্তুতি নিতে তৃণমূল নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “আগামীতে যারা আন্দোলনে থাকবে, নির্বাচনে দল যাকে ভালো মনে করবে, তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। অন্য কোনও কিছু চলবে না।

“ওমুক ভাইয়ের পকেটের লোক হলে মনোনয়ন পাওয়া যাবে না। জনগণ ও দলের জন্য কাজ করতে হবে।”

নির্দলীয় সরকারের দাবিতে জনমত গঠনে বিভিন্ন জেলায় জনসভার পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ে নেতাদের ঢাকায় এনে মতবিনিময় করছেন খালেদা।

এর ধারাবাহিকতায় সোমবার গুলশানে নিজের কার্যালয়ে খুলনা ও বরিশালের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বসেন  তিনি। দুই সিটি মেয়রসহ ২২ জন পৌর মেয়র, ৩৪ জন উপজেলা চেয়ারম্যান, ৪১ জন ভাইস চেয়ারম্যান এই সভায় অংশ ছিলেন।

সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, “আওয়ামী লীগ সঙ্গে জঙ্গিবাদের সম্পর্ক রয়েছে। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনেই জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে। শায়খ আবদুর রহমান কাদের আত্মীয় ছিল? আওয়ামী লীগ জঙ্গিবাদকে মদদ দিয়েছে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে।”

বিএনপির অবস্থান শক্ত রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই, তাদের অবস্থান নড়বড়ে।

“প্রতি পদে পদে তারা দুর্নীতি করছে। এক দিন ওইসব দুর্নীতির জবাবদিহি করতে হবে বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তারা এখন দায়মুক্তির ব্যবস্থা করছে।”

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পদ্মা প্রকল্পে ‘দুর্নীতি’সহ সব দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

“কানাডায় পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিচার চলছে। অথচ বাংলাদেশে তারা অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দিয়ে বসে আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন নিজেই দুর্নীতি করছে। তারাই আবার দায়মুক্তি দিচ্ছে।”

এর বিপরীতে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দেওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও ছিলেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, মাজেদুল ইসলাম, জয়নাল আবেদিন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, মশিউর রহমান, নিতাই রায় চৌধুরী, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমী, শামীমুর রহমান শামীম।

জেলার নেতাদের মধ্যে ছিলেন শফিকুল আলম মনা, এবাদুল হক চাঁন, মাস্টার শহিদুল ইসলাম, ফরহাদ হোসেন, আমজাদ হোসেন, গোলাম নবী আলমগীর, কাজী নুরুজ্জামান, অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, আবদুল ওহাব, অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, সামসুল হুদা, সাবেরুল ইসলাম সাবু, মাহমুদ হাসান খান বাবু, রহমত উল্লাহ পলাশ, টিএস আইয়ুব, বরিশাল সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামাল, খুলনার সিটির মেয়র মনিরুজ্জামান মনি।