গত ১৪ অক্টোবর খালেদা জিয়া ছাত্রদলের নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়ার পর ক্ষোভ-বিক্ষোভ আর মারামারির মধ্যে মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর শাহজাহানপুরে নিজের বাড়িতে পদ না পাওয়া নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি।
দেড় ঘণ্টা বৈঠকের পর মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, “ওরা পদবঞ্চিতও নয়, বিদ্রোহীও নয়। ওদের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাদের মতের অমিল হয়েছে মাত্র। তারা সেই কথাগুলো বলতে এসেছিল, আমি তাদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের বক্তব্যগুলো আমি নেত্রীকে জানাব।”
পদ না পাওয়া নেতা ও তাদের সমর্থকরা গত রোববার নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে ভাংচুর চালানোর পর তাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ওই বৈঠকের পর তিনিও সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য তিনি শুনেছেন এবং তা দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জানাবেন।
সেদিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব একদিন সময় নিলে বিক্ষুব্ধরা তা মেনে কর্মসূচি স্থগিত করেন। এরপর সোমবার ফখরুল ও মির্জা আব্বাসসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা বৈঠক করেন।
তিনি বলেন, “যারা আজ দেখা করতে এসেছে, তারা মনে করে, এই সঙ্কটের সমাধান হওয়া দরকার। আমি বিশ্বাস করি, ছাত্রদল নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা এমন কিছু নয় যে সমাধানযোগ্য নয়।”
কবে নাগাদ সমাধান হবে- জানতে চাইলে মির্জা আব্বাস বলেন, “সময় নির্ধারণ করে বলা যাবে না। তবে সমাধান হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।”
বৈঠকে মির্জা আব্বাসের সঙ্গে যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও ছিলেন। গত রোববার বৈঠকে ফখরুলের সঙ্গেও তিনি ছিলেন।
মির্জা আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের পর গত কমিটির সহসভাপতি আবু সাঈদ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নেতার সঙ্গে আমাদের দাবি নিয়ে কথা বলেছি। চা খেতে এসেছি। আমরা ছাত্রদলকে বাঁচাতে যা করার করব। নেত্রী যেভাবে নির্দেশ দেবেন সেভাবে হবে।”
এই বৈঠকে ছিলেন আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, জাবেদ হাসান স্বাধীন, তরুণ দে, শহীদুল্লাহ এমরান, ফেরদৌস মুন্না, তরিকুল ইসলাম টিটো, নুরুজ্জামান মুকিত লিংকন, মসিউর রহমান মিশু, শামসুজ্জোহা সুমন, হাবিবুর রহমান সুমন, রফিকুল ইসলাম রফিক, রাকিবুল ইসলাম রয়েল, কাজী শহিদুল ইসলাম, রকিউল হাসান সবুজ, আসাদুজ্জামান মিয়া, এসএম মোশারেফ হোসেন, দবির উদ্দিন তুষার।
নতুন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজও বৈঠকে ছিলেন। নতুন কমিটিতে স্থান পেলেও তারা বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে রয়েছেন।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পছন্দে এই কমিটি হয়েছে।
নয়া পল্টনে বিক্ষোভের সময় ছাত্রদলের সাবেক এই দুই সভাপতির কুশপুতুলও পুড়িয়েছে পদ না পাওয়া নেতারা।
রাজিব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত ছাত্রদলের নতুন কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে তারা।