আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণার একদিন পর সোমবার নিজের কার্যালয়ে দলের রাজশাহী বিভাগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় একথা বলেন তিনি।
খালেদা বলেন, “এই সরকারকে ১০ মাস সময় দিয়েছি আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে দেশে একটি দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কোনও আলোচনাই করছে না। অবৈধ সরকার মনে করেছে, বিএনপি আন্দোলন করবে না, নির্বাচন দিতে হবে না।
“আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, গণসংযোগ শেষে আমাদের আন্দোলনে যেতে হবে। সময়মতোই আমি আন্দোলনের ডাক দেব। আপনাদের এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে আমি ডাক দিলেই আপনারা মাঠে হাজির হন।”
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে জনমত গঠনে আগামী ২৩ অক্টোবর নীলফামারী, ৩০ অক্টোবর নাটোর, ৭ নভেম্বর কুমিল্লা ও ১২ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ ২০ দলের সমাবেশে বক্তব্য দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
র্যাবকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে সরকারের সমালোচনা করে খালেদা বলেন, “এরা কথায় কথায় পাকিস্তানি আর্মির কথা বলে। এরা পাকি আর্মি ও স্বৈরাচারের চেয়েও খারাপ, এরশাদের চেয়েও খারাপ।
“যারা দেশের জনগণকে হ্ত্যা করে জঙ্গলে ফেলে রাখে, নদীতে ফেলে দেয়, তারা বিকৃত মস্তিষ্কের। এজন্য আদালত তাকে ( শেখ হাসিনা) রং হেডেড বলেছিল। বিকৃত মস্তিষ্কের লোক দিয়ে দেশের উন্নয়ন হতে পারে না।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “এক নম্বর থেকে শেষ অর্থাৎ শূন্য পর্যন্ত সবাই লুটপাট ও দুর্নীতি করছে। জনগণের কথা তারা চিন্তা করে না।”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে অবশ্যই বিদায় করতে হবে, বলেন তিনি।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল দাবি করে ১৯৮৬ সালে এরশাদ আমলে ভোট বয়কটের পর ১৯৯১ সালে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার কথা বলে তৃণমূল নেতাদের আশ্বস্ত করেন খালেদা।
মতবিনিময় সভায় বিএনপির রাজশাহী বিভাগের নয়টি রাজনৈতিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ৩২ জন উপজেলা চেয়ারম্যান, ৪২ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ২৫ জন পৌর মেয়র অংশ নেন।
তৃণমূলে সংগঠনের অবস্থা জানতে জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে গত শনিবার চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বসেছিলেন খালেদা।
জেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করার আহ্বানও জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ছিলেন ফজলুর রহমান পটল, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমানউল্লাহ আমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান মিনু, মাহবুবউদ্দিন খোকন, হারুন অর রশীদ, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আমিনুল হক, আখতার হামিদ সিদ্দিকী, আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা, নাদিম মোস্তফা প্রমুখ।
রাজশাহীর সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, মোজাহার আলী প্রধান, শাহজাহান মিয়া, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, মো. সাইফুল ইসলাম, খন্দকার সুলতান মাহমুদ, আতাউর রহমান আতা, শামীম আল রাজীও ছিলেন অনুষ্ঠানে।