দলটিকে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিধিমালা মেনে যথাযথভাবে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে বাকশালের পক্ষ থেকে নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেন দলটির মহাসচিব কাজী মো. জহিরুল কাইয়ুম।
রোববার ইসির উপ সচিব আব্দুল অদুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ মুহূর্তে নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়ে ইসির করণীয় কিছু নেই জানিয়ে দলটির চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছি। পরবর্তীতে ইসি যখন দরখাস্ত আহ্বান করবে, তখন আবেদন করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।”
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী দলগুলোর কাছে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়।
এবছর ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচন হওয়ায় ২০১৮ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরের মধ্যে হবে আগামী নির্বাচন। সেক্ষেত্রে অন্তত ছয় মাস আগে নিবন্ধন আবেদন চাইবে ইসি।
নিবন্ধন শর্ত অনুযায়ী, পুরনো দলের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পর যে কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে একটি আসন পেলেই নিবন্ধনযোগ্য বিবেচিত হয়। একটি আসন পেতে ব্যর্থ হলেও নির্বাচনে অংশ নিয়ে অন্তত ৫ শতাংশ ভোট পেলেও হবে।
কিন্তু নতুন দলের ক্ষেত্রে দেশের এক-তৃতীয়াংশ জেলা [২১টি] ও ১০০টি উপজেলার সক্রিয় দপ্তর থাকতে হবে এবং এসব উপজেলায় দলের পক্ষে অন্তত ২০০ ভোটারের সমর্থনসহ দলিল জমা দিতে হবে।
শর্তপূরণ নতুন দল হিসেবে
প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক নেতৃত্বাধীন বাকশাল দুই দশক আগে আওয়ামী লীগে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হওয়ায় এখন জহিরুল কাইয়ুমে নেতৃত্বাধীন দলটিকে নতুন করে সব শর্ত পূরণ করতে হবে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের পর ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে সব দল নিষিদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল গঠন করেছিলেন।
ওই বছরের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বাকশালের বিলোপ ঘটলেও আওয়ামী লীগ নেতা রাজ্জাক ১৯৮৩ সালে দলটি পুনরুজ্জীবিত করেন। ১৯৯১ সালে দলটি পুনরায় আওয়ামী লীগে একীভূত হয়।
জহিরুল কাইয়ুম নিবন্ধনের আবেদনে রাজ্জাকের নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি ও ১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে পাঁচটি আসন পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির নিবন্ধন শাখার এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুরনো দল বিবেচনায় বাকশালের নিবন্ধন পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা এখন নেই বললে চলে।
“আওয়ামী লীগে বিলোপ ঘটেছে বাকশালের। আবেদনকারী মূল দলের (রাজ্জাক নেতৃত্বাধীন বাকশাল) কমিটির কেউ ছিলেনও না। কেউ দাবি করলেও উপযুক্ত প্রমাণ দিতে জীবিত কোনো সাবেক সাংসদকে এনে দরখাস্ত করতে হবে।”
তবে নতুন দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করে তৃতীয় শর্ত (এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলার সক্রিয় দপ্তর থাকা) পূরণ করতে পারলে ইসি বিবেচনা করতে পারে, বলেন ওই কর্মকর্তা।
ইসির সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাকশালের মহাসচিব জহিরুল কাইয়ুম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুরনো দল হিসেবেই নিবন্ধন চাইব, না পারলে নতুন দলের শর্তপূরণ করে আবেদন করব।”
তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের প্রায় সব জেলা ও উপজেলায় তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।