দল গোছানোর নির্দেশ শেখ হাসিনার

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করতে নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2014, 01:51 PM
Updated : 20 Sept 2014, 02:21 PM

শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি এই নির্দেশ দিয়ে বলেন, “সংগঠনটা আসল। সংগঠনকে সুসংহত করতে হবে।”

দীর্ঘদিন সরকারে থাকার কারণে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে বলে তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ।

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর যেদিন আওয়ামী লীগ এই নির্দেশ দিল, সেদিনই এই সরকার আমলে প্রথম হরতালের ঘোষণা দিল বিএনপি।

দলীয় কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে সাতটি বিভাগের জন্য সাতটি টিম গঠন করে সফরের পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।

বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন করে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলার পরামর্শও দেন তিনি।

“অনেক ইউনিয়ন আর উপজেলায় সম্মেলন হচ্ছে। এখান থেকেই নতুন নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে।”

“যেয়ে ঘুরে আসা নয়। বসে থেকে সম্মেলন করতে হবে,” কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

সরকারের সাফল্যের দিকগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরতে আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতে  ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কথাও তুলে ধরতে বলেন তিনি।

নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত বছর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনের বিষয়ে হাসিনা বলেন,“নির্বাচন বানচালের জন্য আন্দোলনের নামে তারা মানুষ হত্যা করেছে।”

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচারপতিদের অপসারণের সিদ্ধান্ত এখন সংসদ নেবে।

ঘাত-প্রতিঘাত আর ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এভাবেই এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে।”

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে শেখ হাসিনা জানান।

“সময় বেশি নাই। আমার বিশ্বাস ,আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারব। আর ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হব।”

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভবিষ্যতে আরো কী করতে হবে ? তা এখনই ঠিক করতে হবে।”

সাতটি বিভাগে সাতটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পাশাপাশি আরো ১৩টি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।  

উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এখন আর সেখানে মঙ্গা নেই। আর, মঙ্গা থাকবে না।”

পণ্যের পরিবহন ব্যয় কমিয়ে আনতে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি করে নৌপথ সচলের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। সমুদ্র সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের ওপরও  গুরুত্ব দেন তিনি।

সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ ও নগদ অর্থ বিতরণের পাশাপাশি ঘরহারাদের ঘর করে দিতে সরকারের উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বিনামূল্যে ৩১ কোটি ৭৮ লাখ পাঠ্য পুস্তক বিতরণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গরিব বাবা-মা’দের এখন আর কষ্ট করতে হবে না। সে দায়িত্ব আমরা নিয়েছি।”

স্বাস্থ্য সেবা খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে ৩০ ধরনের ওষুধ সরকারিভাবে বিনামূল্যে দেওয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা বলেছিলাম, পদ্মা সেতু করব। আমরা পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি।”