বৃহস্পতিবার দশম সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে তিনি লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে বলেন, “আপনার বাসায় তো বিদ্যুৎ যায় না। এ ভোগান্তি বুঝবেন কী করে?”
ব্যাংক ব্যবস্থা, বন্যার ক্ষতি, খাদ্যে ভেজাল, সড়ক ব্যবস্থা, পোশাক শিল্প, নারী নির্যাতন, শিক্ষা ব্যবস্থা, কারাগার সংস্কারসহ নানা সমস্যার বিষয়ে ৫০ মিনিট ধরে বক্তব্য রাখেন তিনি।
এসব সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে আমি দাবি করে সব তুলে ধরেছি। আপনাকে দেশের জন্য ভাবতে হবে। দেশ ও জনগণের করতে সব করতে হবে।”
সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার আহ্বানও জানান বিরোধীদলীয় নেতা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্রুত ঠিক করার আহ্বানও জানান তিনি।
বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে লুটপাটের অভিযোগ তুলে রওশন বলেন, “এ দুটি খাতে যে লুটপাট হচ্ছে, মনে হয় থামছে না। দেড় হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।
“গ্যাস চুরি হচ্ছে ৩ কোটি ঘনফুট, ২২০ কোটি টাকা যার মূল্য। জালিয়াতি আরো আড়াইশ’ কোটি টাকা জলে যাচ্ছে।
৩ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। সরকারের যদি বকেয়া থাকে, মানুষ কিভাবে বিল দেবে?”
“কোথাও যাওয়ার পরে চিন্তায় পড়ি কিভাবে ফিরব? এতটুকু নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। সামান্য বিটুমিন দিয়ে রোলার দেওয়া হয়। কয়েকদিন পরে মুছে যায়।”
যানজটের দুর্ভোগ থেকে রাজধানীবাসীকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রওশন বলেন, “রাস্তায় যদি এত সময় যায় কাজ করব কখন? উপায় খুঁজে বের করতে হবে।”
কারাবাসের অভিজ্ঞতা
নিজের কারাবাসের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বর্তমান সরকারকে কারাগার সংস্কারেরও দাবি জানান বিরোধীদলীয় নেতা।
স্বামী এইচ এম এরশাদের ক্ষমতাচ্যুতির পর কারাগারের সাত দিন ছিলেন রওশন।
তখনকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্লেট মগ, কিছু কাপড় নিয়ে এলাম। ছোট্ট একটা জায়গায় ৫৪ জন কয়েদি, একটা মাত্র টয়লেট। সাধারণ কয়েদিদের খাবার, আমি খাইনি।
“আমার জন্যে চা নিয়ে আসে। জেল গেটের চা-বিস্কিট। আমি জীবনে যা দেখিনি, তা খেতে হল। মাটিতে শুয়ে সাতদিন ছিলাম।”
“জেলগুলোর সংস্কার করার দরকার। ওখানে মানুষ তো থাকে। পুরুষ-মহিলা যারা আছে তারা মানুষ তো,” বলেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রওশন।
নিজ এলাকা ময়মনিংহের জন্য দুটো দাবিও করেন বিরোধীদলীয় নেতা।
“ময়মনসিংহকে বিভাগ চাচ্ছি। আপনাকে তা করতে হবে, করতে হবে। ময়মনসিংহ মেডিক্যালে বার্ন ইউনিট দরকার।”