‘যারা আঁতাতের কথা বলে তারাও ষড়যন্ত্রকারী’

যুদ্ধাপরাধে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় নিয়ে যারা সরকারের বিরুদ্ধে আঁতাতের অভিযোগ তুলেছেন তাদের ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বললেন আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2014, 10:23 AM
Updated : 18 Sept 2014, 12:45 PM

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের এক কর্মসূচিতে ত্রাণমন্ত্রী মায়া বলেন, “আঁতাত শব্দটি আওয়ামী লীগের ডিকশনারিতে নেই। যারা আঁতাতের কথা বলে তারা ষড়যন্ত্রকারীদের একটি অংশ। আওয়ামী লীগ আঁতাতের রাজনীতি করে না।”

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায় হয় বুধবার, যাতে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয় তাকে।

এ রায় প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করে যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলনরত গণজাগরণ মঞ্চ। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আঁতাত করে এই রায় দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পর তার ফাঁসির দাবিতে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে গড়ে উঠে শাহবাগের আন্দোলন, যা পরে গণজাগরণ মঞ্চ নামে পরিচিতি পায়।

তখন প্রায় এক মাস শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যায় তারা। সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকেও তাদের নিরাপত্তা দেয়া হয়।

গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের মুখেই আইন সংশোধন করে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষেরও আপিল করার সুযোগ দেয়া হয় এবং কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল নিষ্পত্তির পর গত বছরের ডিসেম্বরে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়।

ছবি: নয়ন কুমার/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

তবে বুধবার সাঈদীর আপিলের রায় প্রত্যাখ্যান করে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের ওপর জলকামান ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়া হয়, যাতে মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের  সামনে জামায়াতে ইসলামীর হরতালবিরোধী অবস্থানে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মায়া।

সাঈদীর রায় নিয়ে তিনি বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড থেকে কারাদণ্ডের রায় মেনে নিতে পারি না। দেশের মানুষ হতাশ হয়েছে। তবে যেহেতু এটি সর্বোচ্চ আদালতের রায়, তাই এ রায় আমরা মেনে নিচ্ছি।”

সাঈদীর মুক্তি দাবিতে জামায়াতের ইসলামীর হরতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আদালতের দেয়া রায়ে মুক্তিযোদ্ধারা খুশি হতে পারে নাই, খুশি হয়েছে জামায়াত। তারা খুশি হয়েই আজকের এই হরতাল দিয়েছে।  এই হরতাল জামায়াতের পিঠ বাঁচানোর হরতাল।”

ঢাকাসহ সারা দেশের কোথাও কোনো হরতাল হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে জামায়াত-শিবির আর মাথাচাড়া দিতে পারবে না। হরতালও করতে পারবে না।”

হরতালবিরোধী অবস্থানে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী  কামরুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ, সহসভাপতি ফয়েজউদ্দিন মিয়া, মুকুল চৌধুরী এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা  উপস্থিত ছিলেন।