সব সংশোধন ‘ছুড়ে’ ফেলা হবে: বিএনপি

ক্ষমতায় ফিরলে আওয়ামী লীগ আমলে করা সংবিধানের সংশোধনগুলো বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2014, 12:47 PM
Updated : 17 Sept 2014, 12:48 PM

বিচারপতিদের সরানোর ক্ষমতা আইন প্রণেতাদের হাতে ফেরাতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনের বিল পাসের জন্য সংসদে উত্থাপনের দিন বুধবার এই ঘোষণা দেন বিএনপির নীতি নির্ধারকদের একজন এম কে আনোয়ার ।   

এক আলোচনা সভায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য সংবিধানের ‘পঞ্চদশ’ ও ‘ষোড়শ’ সংশোধনীর কথা উল্লেখ করে এই ঘোষণা দেন।

এম কে আনোয়ার বলেন, “জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া একটা ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী ক্ষমতায় বসে আছে। তারা সংবিধানকে নিজেদের মতো করে যাচ্ছেতাইভাবে কাটা-ছেঁড়া করেছে। বিচার বিভাগকে তারা ধ্বংস করে ফেলেছে।

“আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, যখন জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে, এই সরকারের সব সংশোধনী ছেঁড়া নেকড়ার মতো ছুড়ে ফেলে দেয়া হবে।”

আওয়ামী লীগের গত সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ বিবেচনায় সর্বোচ্চ দণ্ডের বিধান রাখা হয়।

এছাড়া এ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২’র সংবিধানের চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের প্রতিবাদে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এখন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধের ৫০০ দিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এম কে আনোয়ার বলেন, গণমাধ্যমের ওপর সরকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।

“রাষ্ট্রের সব অঙ্গকে আজ ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমকে  নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার নানা নীতিমালা করেছে।”

“৭৫ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার কী করেছিল? ’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর তারা কয়েকটি সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। কেবল তাই নয়, তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে, প্রশাসনসহ সব কিছু চরমভাবে দলীয়করণ করেছে।”

পাঁচ সচিবের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে চাকরি করাকে প্রশাসনে সরকারের ‘দলীয়করণের’ নজিরের প্রমাণ বলে দাবি করেন সাবেক সচিব এম কে আনোয়ার।

“আমরা কোথায় যাব? যারা রাষ্ট্রের সচিব মর্যাদায় আছেন, তারা কয়েক বছর চাকরির মেয়াদ বাড়াতে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ জমা দিয়েছেন। যা আজ ধরা পড়েছে।”

“এসব সচিব এমন কাজ করার সাহস কোথা থেকে পায়’- প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “ওই সচিবদের দিয়ে সরকার এমন কাজ করিয়েছে যে তারা যে কোনো সময়ে থলের বিড়াল প্রকাশ করতে পারে। সেজন্য তারা আজ যা ইচ্ছা তাই করছেন।”

সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ‘ছক’ শিগগিরই  বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রকাশ করবেন জানিয়ে সবাইকে ‘অপেক্ষা’ করার পরামর্শ দিয়েছেন দলের শীর্ষ পর্যায়ের এই নেতা।

দিগন্ত টেলিভিশনের নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাংবাদিক সাদেক খান,কলামনিস্ট ফরহাদ মজহার, গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান, সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, কল্যাণ পাটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম,নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বক্তব্য রাখেন।