ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে: জয়

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বিরোধিতাকারীদের সমালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, কিছু লোক এই বিল নিয়ে ‘বিতর্কের ধূম্রজাল’ সৃষ্টি করতে চাইছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2014, 08:28 PM
Updated : 16 Sept 2014, 08:28 PM

এর পেছনে তাদের ‘ব্যক্তিগত স্বার্থ’ রয়েছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনার ছেলে জয়। 

মঙ্গলবার রাতে ফেইসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান তাদের আইনসভাকে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক, এমনকি রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসনের ক্ষমতা দিয়েছে। আমাদের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল নিয়ে কতিপয় লোক বিতর্কের ধূম্রজাল সৃষ্টি করতে চাইছে।

“আমার জানামতে পৃথিবীর বেশিরভাগ গণতন্ত্রেই উচ্চ আদালতের বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা আইনসভার ওপর ন্যস্ত রয়েছে।”

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আইন প্রণেতাদের হাতে ফিরিয়ে দিতে বুধবার জাতীয় সংসদে এই ষোড়শ সংশোধনী বিল পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

জয় বলেন, “অভিসংশনের জন্যে সংসদে দুই তৃতীয়াংশের ভোট প্রয়োজন, যেমনটি প্রয়োজন সংবিধান সংশোধনের জন্য। যদি সংসদের দুই তৃতীয়াংশ ভোটে সংবিধানে পরিবর্তন আসতে পারে, তাহলে সংসদে একই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট কেন বিচারকদের অভিশংসন করতে পারবে না?”

এর বিরোধিতাকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “কেন কিছু মানুষ এর বিরোধিতা করছে? সম্ভবত, এখানে তাদের নিজেদের কিছু স্বার্থ রয়েছে। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, এই ষোড়শ সংশোধনী বিল আমাদের ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানকে প্রায় সর্বাংশে পুনর্প্রতিষ্ঠিত করবে।”

বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পাশাপাশি ড. কামাল হোসেনও এই সংবিধান সংশোধনের বিরোধিতা করেছেন, যিনি বাহাত্তরে দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন।

এ বিষয়ে জয় বলেন, “আমার কাছে খুবই কৌতুকপ্রদ মনে হচ্ছে একটি বিষয়। বিখ্যাত কয়েকজন ব্যক্তি, যারা এই বিলের বিরোধিতা করছেন, তারা নিজেরাই ১৯৭২ সালের সংবিধানের খসড়া করার কাজে যুক্ত ছিলেন। আমি আমাদের মূল সংবিধানে ফিরে যেতে চাই। স্বৈরশাসক ও ক্ষমতা জবরদখলকারীরা আমাদের জাতির যে ক্ষতি সাধন করেছে, তা আমাদের সারিয়ে তুলতে হবেই।”

প্রধানমন্ত্রীর ছেলের ভাষায়, “১৯৭৫ সাল থেকে মূলত জেনারেল জিয়াউর রহমানের প্রদর্শিত পথে যতো সামরিক স্বৈরশাসকেরা সংবিধানের ওপর অবৈধ অসাংবিধানিক কাটাছেঁড়া চালিয়েছে, তার সবকিছুই এ সংশোধনীতে বাতিল হবে। সংবিধানের ওপর সামরিক শাসকদের এ কাটাছেঁড়াকে আমাদের উচ্চ আদালতই অসাংবিধানিক ও অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন।”

জয় তার লেখা শেষ করেছেন এভাবে, “যে জাতি নিজের শেকড়কে ভুলে যায়, সেটি পথ হারানো জাতি। আমাদের অবশ্যই আমাদের শেকড়ের কাছে ফিরে গিয়ে একটি নতুন সূচনা করতে হবে।”