ভয় পায় বলে তারেকের কথায় তাদের ‘গা জ্বলে’: ফখরুল

আওয়ামী লীগ নেতারা তারেক রহমানকে ভয় পান বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2014, 01:19 PM
Updated : 2 Sept 2014, 01:21 PM

জিয়া-খালেদার ছেলের বিতর্কিত বিভিন্ন বক্তব্যে ক্ষমতাসীনদের তীব্র বাক আক্রমণের  দিকে ইঙ্গিত করে মঙ্গলবার ছাত্রদলের এক আলোচনা সভায় এই দাবি করেন তিনি।

ফখরুল বলেন, “তারেক রহমানকে তারা ভয় পায়। তারেক রহমান একবার বক্তব্য দিলেই তাদের (সরকার) গায়ে জ্বালা ধরে যায়।”

একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক প্রবাসে দলের বিভিন্ন সভায় বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আসছেন।

সোমবারও লন্ডনে একটি সভায় তিনি দাবি করেন, তার বাবা জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন এবং তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য জিয়াকে দায়ী করে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের তখনকার এবং তাদের এখনকার মিত্র দলের নেতাদেরই দায়ী করেন তারেক।

ফখরুল বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে তথ্য তারেক রহমান তুলে ধরেছেন, তা তার নিজের কোনো বক্তব্য নয়। ওই সব বক্তব্য ইতিহাস থেকে নেয়া, যা আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছ থেকেই স্বীকৃতি লাভ করেছে

“তারেক রহমান বলেছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীরা এই সরকারের ( শেখ হাসিনা) আশ-পাশেই আছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাকের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন যে ব্যক্তিটি তিনিই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। এমন অনেকে রয়েছেন, যারা শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার উৎখাতে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিলেন।”

তারেককে আগামী দিনের ‘অবিসংবাদিত’ নেতা অভিহিত করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন বলেই তাকে ১/১১ তে চরম নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে।

“বন্দি অবস্থায় তাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। যে গোষ্ঠি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল, তারাই ১/১১ তে তারেক রহমানের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়।”

দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক আগামীতে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন বলেও জানান ফখরুল।

জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার তারেক ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান। এরপর চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান তিনি। সপরিবারে তিনি এখনো সেখানেই রয়েছেন।

তারেকের কারামুক্তির সপ্তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা করে ছাত্রদল, যাতে ফখরুল বক্তব্য রাখেন।

সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, “সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে অন্ধকার গহ্বরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

“বর্তমানে দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই, অর্থনীতি, জনপ্রশাসনসহ সব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে তারা। বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা এমন এক সংসদের কাছে ফিরিয়ে দিতে যাচ্ছে, যারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।”

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে ২০ দলের চলমান আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান  ফখরুল।

ছাত্রদল সভাপতি আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাবেক নেতা শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবীর খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কামরুজ্জামান রতন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম আলিম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব।