পঁচাত্তরের ‘গোয়েন্দা দলিল’ প্রকাশের দাবি সেলিমের

পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ‘গোপন দলিল’ প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে ওই সময়ের ‘রাজনৈতিক অপরাধীদেরও’ বিচারের দাবি জানিয়েছেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2014, 04:39 PM
Updated : 29 August 2014, 09:43 PM

১৫ অগাস্টকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতিরোধের দিন’ অভিহিত করে শুক্রবার পল্টনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “১৫ অগাস্টের ঘটনা ক্রিমিনাল অফেন্স ছিল না, এটি ছিল পলিটিক্যাল অফেন্স। এ থেকে শিক্ষা নেয়া প্রয়োজন।”

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি সেলিম সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ৩০ বছর পর তাদের গোপন দলিল প্রকাশ করে। আপনাদের বলব- ১৫ অগাস্টের গোপন দলিলগুলো প্রকাশ করা হোক। ওই সময়ের রাজনৈতিক অপরাধীদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।”

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসিতে ঝোলানোর পরও ১৫ অগাস্টের প্রতিরোধ শেষ হয়নি মন্তব্য করে সেলিম বলেন, “পঁচাত্তরের পর দেশ উল্টো দিকে গেছে। দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনতে পারলেই প্রতিরোধ শেষ হবে।”

এই বাম নেতার ভাষায়, ‘মুক্তিযুদ্ধকে হত্যার জন্যই’ ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল।

সেই সময়ের ঘটনাপ্রবাহ এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম তুলে ধরে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের লোকেরা মোশতাকের (খন্দকার মোশতাক আহমেদ) মন্ত্রিসভায় যোগ না দিলে ঘটনা ভিন্নভাবে প্রবাহিত হতো। কিন্তু এগুলো পরিকল্পনা করাই ছিল।”

সব বিজয়ই বিজয় নয়- এমন মন্তব্য করে সিপিবি সভাপতি বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে প্রতিবাদের জন্য আওয়ামী লীগের অনেককেই পাওয়া যায়নি। অনেকেই ওই সময়ের নতুন সরকারের সঙ্গে লিয়াজোঁতে ব্যস্ত ছিলেন।”

মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্টের শহীদ তাজুল মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ‘পারিবারিক কারণে’ তিনি আসতে পরেননি বলে আয়োজকরা জানান।

মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট ‘অগাস্ট ১৯৭৫ এবং ২০০৪’, ‘নৃশংস দানব: প্রতিরোধী মানব’ শিরোনামে বিশেষ এই সম্মিলনীর আয়োজন করে।

এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট নিহত বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনরেল (অব.) জামাল উদ্দিন, ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স কর্পোরাল মাহবুব ও আওয়ামী লীগকর্মী রফিকুল ইসলাম ‘আদা চাচা’র পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মননা ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।

এছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা ‘আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি’ কবিতার জন্য বিশেষ সম্মাননা জানানো হয় কবি নির্মেলন্দু গুণকে।

মণি সিংহ-ফরহাদ ট্রাস্টের সভাপতি শেখর দত্তের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে ট্রাস্টের সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব জামান, কবি নির্মেলন্দু গুণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।