শুক্রবার বিকালে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ফখরুল ছয় বছর ধরে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘আগামীদিনের রাষ্ট্রনায়ক’ অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, “তারেক রহমানকে আমি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে হিসেবে দেখি না। আমি তাকে দেখি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে। তিনি দেশের মানুষের স্বপ্ন ধারণ করে আছেন।
তারেকের উদ্দেশ্যে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ অকৃতজ্ঞ নয়। আমরা আপনাকে আশ্বাস দিতে চাই, যে কারণে আজ আপনি নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন, ইনশাল্লাহ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করেই আপনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।’’
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে সম্প্রতি লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে তারেকের বক্তব্যের সূত্র ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “পঁচাত্তর সালে কারা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির রক্তের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে খোন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভায় শপথ নিয়েছিলেন? এইচ টি ইমাম ওইদিন খোন্দকার মোশতাকের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন।
“সেনা বাহিনীর প্রধান কে এম শফিউল্লাহ, বিমান বাহিনীর প্রধান এ কে খন্দকারসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা সেদিন বঙ্গভবনে গিয়ে কাকে স্যালুট দিয়েছিলেন? আজ তারাই এই সরকারের চারপাশে ঘিরে আছে। এসব সত্য কথা তারেক রহমান তুলে ধরেছেন বলে মন্ত্রীদের গায়ে জ্বালা করে। তারা অশ্লীল ভাষায় তাকে গালিগালাজ করেন।’’
বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, “যে মানুষটি বিদ্রোহ করে পরিবার-পরিজনকে ফেলে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ঘোষণা করলেন তাকে তারা খলনায়ক বানায়। তাকে খুনী ও পাকিস্তানের অনুচর বলতে দ্বিধা করে না। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের চরিত্র।”
মির্জা ফখরুলের দাবি, বাংলাদেশে জনগণের জন্য যত ‘শুভ’ কাজ হয়েছে তা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানই করেছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জনগণ আওয়ামী লীগের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ তুলে দিয়েছিল। তাদের হাত দিয়ে তখন বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ নানা কালা কানুন হয়েছে।
“চুয়াত্তরে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। রক্ষীবাহিনীর মতো একটি আলাদা বাহিনী গঠন করে ভিন্নমতের রাজনৈতিক কর্মীদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। এসব কথা তুলে ধরলেই আওয়ামী লীগের নেতারা রাগান্বিত হয়ে ওঠেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, অধ্যাপক মইনুল আহসান খান, অধ্যাপক আবদুর রশীদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমীর হোসেন ভূঁইয়া, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হোসেন ডোনার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।