ইনসাফ থাকবে না: ফখরুল

‘অবৈধ’ সংসদের কাছে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা গেলে জনগণ ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে বলে মনে করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2014, 02:19 PM
Updated : 27 August 2014, 07:30 PM

সংবিধান সংশোধন করে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগেকে পুরোপুরি করায়ত্ত করতে যাচ্ছে বলেও তার দাবি।

বিচারপতিদের অভিশংসনে জিয়াউর রহমানের সময়ে প্রবর্তিত সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল বিলুপ্ত করে ১৯৭২ এর সংবিধান অনুযায়ী তা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে বুধবার সমাবেশ করে ২০ দল।

জাতীয় প্রেসক্লাবে কেন্দ্রীয় সমাবেশে বিএনপির মুখপাত্র ফখরুল বলেন, “যে সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না, তাদের হাতে সরকার বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে যাচ্ছে।

“এর অর্থটা পরিষ্কার, এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের কফিনে শেষ পেরেকটা সরকার মারতে চান, যাতে আর বিচারপতিরা সুচিন্তিতভাবে কোনো রায় দিতে না পারেন।”

সংসদের কাছে অভিশংসন ক্ষমতা গেলে জনগণ ‘ন্যূনতম ইনসাফ’ পাবে না দাবি করে তা প্রতিহত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

৫ জানুয়ারির নির্বাচনবর্জনের পর বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের তৃতীয় কর্মসূচিতে বেশ জনসমাগম ঘটে। মিলনায়তনে স্থান না হওয়ায় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণেও অবস্থান নেন অনেকে।

লন্ডনে তারেক রহমানের বক্তব্যের পর তাকে নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের সমালোচনার জবাবে বর্তমান সরকারের দুই মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেননের স্বাধীনতা পরবর্তী ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ফখরুল।  

“১৯৭৫ সালে একদলীয় বাকশালের ব্যাপারে মেনন ও ইনু সাহেবের ভুমিকা কী ছিল? এই ইনু সাহেবরাই ওই সময়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎখাত করতে জাসদ ও সশস্ত্র গণবাহিনী গঠন করেছিলেন।”

ওই সময়ে জাসদের মুখপত্র ‘গণকণ্ঠ’ বন্ধ করে দেয়ার কথাও তুলে ধরেন বিএনপি নেতা।

“স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে খুনি বলবেন, তারেক রহমানকে কুলাঙ্গার বলছেন। সত্য কথা বললে এখন আপনাদের গায়ে লাগছে।”

বিজিবি কর্মকর্তাদের ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীতে প্রশিক্ষণ নেয়ার বিরোধিতাও করেন ফখরুল।

“বিএসএফ বাংলাদেশের বিজিবিকে প্রশিক্ষণ দেবে। যার অর্থ দাঁড়াচ্ছে- যাদের কাছ থেকে সীমান্ত রক্ষা করতে হবে, তারা আমাদের প্রশিক্ষণ দেবে। এই হচ্ছে দেশের সার্বভৌমত্বের অবস্থা!”

বিএনপির আন্দোলন করার সামর্থ্য নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “ক্ষমতা ছেড়ে জনগণের কাতারে নেমে আসুন। নির্বাচন দিয়ে দেখুন, দেখা যাবে কার ক্ষমতা বেশি।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান ফখরুল।

বিএনপিসহ জোট নেতাদের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগপত্র দাখিলের সমালোচনা করে তিনি বলেন,এটা বিরোধী দলকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর ষড়যন্ত্র।  

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস বলেন, “৫ লাখ নেতা-কর্মীকে কারাগারে রেখে আপনারা পার পাবেন না। বিক্ষোভ যখন আন্দোলনে রূপ নেবে, তখন আপনারা পালাবার পথ পাবেন না।”

সমাবেশে ২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর তাসনিম আলম, রিদওয়ান উল্লাহ শাহিদী, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, লেবার পার্টির মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, খেলাফত মজলিশের সৈয়দ মজিবুর রহমান, এনপিডির আলমগীর মজুমদার, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।

ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের পরিচালনায় এই সমাবেশে বিএনপি নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেলিমা রহমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।