সরকার উস্কানি দিচ্ছে, অভিযোগ আব্বাসের

বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘আরো মামলা দেয়ার’ জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতারা আন্দোলন নিয়ে ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা আব্বাস।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2014, 01:23 PM
Updated : 22 August 2014, 02:50 PM

গাজায় ইসরায়েলের হামলা এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতির প্রতিবাদে কর্মসূচি সফল হয়েছে দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেছেন,  উচ্চ আদালতের বিচারকদের অভিশংসন ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিবাদেও তারা কর্মসূচি দেবেন।

শুক্রবার রাজধানীর শাহজাহানপুরের নিজের বাসায় দলের আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিএনপির মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস।

বিএনপির ‘নরম কর্মসূচিতে’ জনগণ সাড়া দেবে না- আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “নরম কর্মসূচি কাকে বলে? এ ধরনের কথা বলে সরকার বিএনপিকে উস্কে দিতে চায়, যাতে আরো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দেয়া যায়।”

বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন তিনি।

এই বিএনপি নেতা বলেন, “উনি (সৈয়দ আশরাফ) বলেছেন, ১০০ মানুষ নিয়ে মির্জা আব্বাস রাস্তায় বসে থাকলে কিছু হবে না। আমি তাকে বলতে চাই, মির্জা আব্বাসকে ১০০ লোক নিয়ে বসে থাকার সুযোগ দেন। এটাই আমি চাই। তারপর দেখা যাবে।”

মির্জা আব্বাস বলেন, “এক এগারোর আগে আওয়ামী লীগ যে হিংসাত্মক কর্মসূচি দিয়েছিল, তেমন আমরা কখনোই দেব না। মানুষ মেরে ক্ষমতায় যাওয়ার ইচ্ছা আমাদের নেই।  আমরা চাই, জনগণের ক্ষমতা তাদের হাতে ফিরিয়ে দিতে।”

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ১৬ অগাস্ট বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কালো পতাকা মিছিল এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতির প্রতিবাদে ১৯ অগাস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ সফল হয়েছে বলেও দাবি করেন বিএনপির মহানগর আহ্বায়ক।

তিনি বলেন, “ব্যাপক মানুষজন এতে অংশ নিয়েছে। জনপ্রতিনিধিত্বহীন সংসদের কাছে বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগের প্রতিবাদেও দলের হাই কমান্ড কর্মসূচি দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে ২১ অগাস্ট থেকে সারাদেশে ১০দিনের গণসংযোগ কর্মসূচিও চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, “মহানগর কমিটি গঠনের কার্যক্রমে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। বিভিন্ন টিমে ভাগ করে কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমার ভাগেও কয়েকটি থানার দায়িত্বে আছে। আমাদের কাছে নানা অভিযোগ-অনুযোগ আসছে। আমরা তা সমাধানও করছি।”

তিনি বলেন, তারা সংগঠনকে এমনভাবে শক্তিশালী করতে চান, যাতে ‘ধীর পায়ে শক্ত হয়ে’ সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। কোনো কারণেই যাতে ‘পিছু হটতে’ না হয়।

সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা আব্বাস বলেন, “তারা দেশের অবস্থা বুঝতে পারছে না। তারা সমুদ্রের গর্জন শুনতে পারছে না। তাদের বলব, রাজপথের দিকে তাকান, দেয়ালে কান দিয়ে শোনেন। ক্ষমতায় থাকলে মন্ত্রীর চেয়ারে বসলে রাজপথের অবস্থা বুঝতে চান না।”

গত ১৮ জুলাই সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বাধীন আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দিয়ে মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক করে ৫২ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি। নতুন আহ্বায়ক কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়।

মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুও উপস্থিত ছিলেন।