প্রধানমন্ত্রী আদালতকে প্রভাবিত করছেন: বিএনপি

একুশ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার বিচারাধীন মামলা সম্পর্কে বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আদালতকে প্রভাবিত এবং ‘মূল আসামিদের’ আড়াল করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2014, 11:07 AM
Updated : 22 August 2014, 11:31 AM

শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “আমরা মনে করি, এরকম বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মামলার মূল আসামিদের আড়াল করতে চাচ্ছেন। কেবল তাই নয়, তার এরকম বক্তব্যের ফলে মামলার সুষ্ঠু ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হবে আমরা আশঙ্কা করছি।”

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার স্মরণে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যেমন জিয়াউর রহমান জড়িত ছিল, ঠিক তেমনি ২১ অগাস্টের হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও ওই সময়ের মন্ত্রিসভার সদস্যরা জড়িত ছিল।”

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনায় খন্দকার মাহবুব বলেন, “দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে একটি বিচারাধীন মামলার বিষয়ে এরকম বক্তব্য দিয়ে তিনি আদালতকে প্রভাবিত করছেন।”

শেখ হাসিনাকে ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ আখ্যায়িত করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব বলেন, “প্রথমে তদন্তের পর এ মামলায় চার্জশিট আদালতে জমা দেয়া হয়। এরপর বর্তমান সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আবার পূর্ণ তদন্তের নামে তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে এ মামলায় আসামি করে। এ থেকে বোঝা যায়, সরকার সুপরিকল্পিতভাবে মামলাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।’’

উচ্চ আদালতের বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সংসদ সদস্যরা কার্যত স্বাধীন নন। যখন কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অযোগ্যতার অভিযোগ এনে অভিশংসনের প্রস্তাব সংসদে আনা হবে, তখন ওই বিচারপতির বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের সিদ্ধান্তই তাদের সদস্যদের মেনে চলতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক।

“এ কারণে সংসদের হাতে অভিশংসনের ক্ষমতা দেয়ার বিরুদ্ধে আমরা। আমরা মনে করি, বিচার বিভাগ স্বাধীন না থাকলে দেশে গণতন্ত্র থাকবে না, আইনের শাসনও অচল হয়ে পড়বে।”

বাংলাদেশ রিপাবলিকান ফোরামের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী ও মৌলিক অধিকার’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অন্যদের মধ্যে যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা সরফুদ্দিন সান্টু, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।

সম্প্রচার নীতিমালা রুখতে আন্দোলন

গণআন্দোলনের মাধ্যমেই জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা রুখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “আগামী ১ সেপ্টেম্বর ভোটারবিহীন সংসদের অধিবেশন ডাকা হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, ওই অধিবেশনে জাতীয় সম্প্রচারনীতিসহ নানা আইন পাস হতে পারে। তাই এর আগেই গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যাতে সরকার কোনো নিবর্তনমূলক আইন না করতে পারে।”

বিএনপির সহযোগী সংগঠন ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়।

ফারুক বলেন, “সরকারকে বলব, কালা-কানুন করবেন না। হত্যা-নির্যাতন বন্ধ করুন। এই সংসদের জনপ্রতিনিধিত্ব নেই। তাই সংসদ ভেঙে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’’

অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, মো. হানিফ ও সুরঞ্জন ঘোষ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন।