১৯৭১ সালে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলার মধ্য দিয়েই কার্যত স্বাধীনতার ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রেরণাদায়ী ওই ভাষণ এখনো আলোচিত, এনিয়ে লেখা হয়েছে কবিতাও।
বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণকে বিশ্বসেরা অন্যতম ভাষণ বলে অনেকে মনে করেন। এবার বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে যুক্তরাজ্যের একটি প্রকাশনায় তা স্থান পেয়েছে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বঙ্গবন্ধুর বিশ্বসেরা ভাষণের বিষয়টি এতদিন আমরা বলে এসেছি, এখন তা বাস্তবায়িত হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে তা প্রকাশ হল।”
বইটির সঙ্কলক - জ্যাকব এফ ফিল্ড। খৃস্টপূর্ব ৪৩১ সাল থেকে ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সেরাভাষণ নিয়ে ২২৩ পৃষ্ঠার বই এটি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার উইনস্টন চার্চিলের ভাষণ থেকে নেয়া শিরোনামের এই সঙ্কলন গ্রন্থের শেষ ভাষণটি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগ্যানের ‘টিয়ারস ডাউন ওয়াল’।
বইটির ২০১ পৃষ্ঠায় ‘দ্য স্ট্রাগল দিস টাইম ইজ ট্য স্ট্রাগল ফর ইন্ডিপেন্ডেন্স’ শিরোনামে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ।
শামসুজ্জামান খান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণটি বিশ্বসেরা ভাষণের একটি। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে অনেক প্রকাশনা রয়েছে। কোনোটিতে এ পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
“এই প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বসেরা ভাষণগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলো ৭ মার্চের ভাষণ। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বসেরার তালিকায় স্থান পেল বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণটি। এটি অনেক আনন্দের।”
বইটি নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক।
মফিদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। কানাডা সফরকালে একটি মাত্র কপি নিজের জন্য সংগ্রহ করেন তিনি।
“সেরা ভাষণ নিয়ে অনেক বই রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিশ্বসেরার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে কোনো প্রকাশনা আগে পাইনি। এই প্রথম সেরাদের তালিকায় ছাপানো হল,” বলেন এই গবেষক।
গত শনিবার কানাডা থেকে ফেরার পর এখনো বইটি পড়ার সুযোগ না হওয়ায় বিস্তারিত কিছু বলতে পারেননি মফিদুল হক।
আট মাস আগে প্রকাশিত বইটি বাংলাদেশে আলোচনায় আসে সোমবার বাংলা একাডেমিতে সাংবাদিক বেবী মওদুদের স্মরণ সভায়।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থনায় বেবী মওদুদের ভূমিকার কথা তুলে ধরার এক পর্যায়ে এই বইটি তুলে ধরে বলেন, “আজ দুঃখের মাঝেও একটা আনন্দের খবর রয়েছে। বেবী থাকলে খুব খুশি হতেন।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বেবী মওদুদ ও আমি বারবার চেয়েছিলাম বিশ্বসেরা ভাষণে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ অন্তর্ভুক্ত হোক। আজ একটা বই পেয়েছি, গ্রেট স্পিচের তালিকায় তা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।”
(৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণের সময় নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আবদুর রাজ্জাকের স্মৃতিকথন পড়ুন)