১৭ অগাস্ট বোমাহামলা খালেদার মদদে: আশরাফ

২০০৫ সালে দেশজুড়ে জেএমবির বোমাহামলা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার গোচরেই হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2014, 01:23 PM
Updated : 17 August 2014, 06:08 PM

এই বোমাহামলার নবম বছর পূর্তিতে রোববার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া শুধু জানতেনই না, যারা বোমা হামলা করেছে তাদের পূর্ণ সহায়তাও করেছেন।”

বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট সারাদেশে একযোগে বোমাহামলা চালিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। এ দলটি পরে নিষিদ্ধ হয়, ফাঁসি হয় শীর্ষনেতাদের।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় আশরাফ ওই বোমাহামলার ‘মদদদাতা’ হিসাবে খালেদা জিয়াকে সরাসরি দায়ী করেন।

“খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন, বাংলাদেশে তালেবান-আল কায়দার মত জঙ্গিগোষ্ঠী গড়ে তুলতে। সারাদেশে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করে তালেবান বা আল কায়েদার একটা সুরক্ষিত ঘাঁটি হিসাবে তৈরির চেষ্টা করেছে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী।”

“তখন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, তিনি তাদের পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন।”

খালেদা জিয়া আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ার মত তালেবান, আল কায়দা বা আইএসআইএসের মতো জঙ্গি সংগঠন গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন বলেও দাবি করেন এই মন্ত্রী।

“সেদিন শেখ হাসিনা অত্যন্ত দৃঢ় সিদ্ধান্ত না নিলে এখনো বাংলাদেশে যুদ্ধ চলত।”

বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফিরলে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য বানাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

“সকলকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে তারা কোনোভাবেই আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। আওয়ামী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে তারা আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলন করে ‘নিখোঁজ’ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের জন্য সবার সহযোগিতা চান। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/ ঢাকা, এপ্রিল ২৬, ২০১২

এই দিনটি পালনের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে আশরাফ বলেন, “আজকে কেন এ দিবস পালন করছি? এ দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দিনে সারাদেশে ৫০০ জায়গায় বোমা ফাটানো হয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠি জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল।”

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণার জবাবও দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

“হুমকি-ধমকি দিয়ে লাভ নাই। ওটা হুমকি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে।”

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “ফখরুলের সামনে মুলা ঝুলাইয়া রাখা হয়েছে। এটা একটা জাহাজের গল্পের মত। এই লড়িছ না, তোরে সারেং বানাব।

“কিন্তু ফখরুল সাহেবকে সারেং বানানো হবে না। তার (খালেদা জিয়া) ছেলে দেশে না আসা পর্যন্ত কাউকেই মহাসচিব করা হবে না। তারেক দেশে এলে মা হবে চেয়ারম্যান, ছেলে হবে মহাসচিব।”

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের মুখপাত্র ফখরুলকে ‘ভদ্রলোক’ অভিহিত করে আওয়ামী লীগের মুখপাত্র আশরাফ বলেন, “তার সঙ্গে আমার অনেক রাজনৈতিক আলাপ হয়। তার জন্য দুঃখ হয়। তার জন্য কষ্ট পাই।

“তিনি কিসের আসায় এত দৌড়াদৌড়ি করেন? আপনি যতই দৌড়াদৌড়ি করেন না কেন, কোনো লাভ হবে না।”

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও সাহারা খাতুন, যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রমুখ।