‘নাশকতা হলে দায় নিতে হবে’

সহিংস আন্দোলনের চেষ্টা করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দেরি হবে না জানিয়ে বিএনপিকে হুঁশিয়ার করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2014, 09:03 AM
Updated : 1 August 2014, 09:37 AM

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আন্দোলনের নামে জানমালের ক্ষতি, গাড়িতে আগুন, বোমা মেরে মানুষকে হত্যার মতো সহিংস আন্দোলন করলে প্রশাসন বসে থাকবে না। এই ধরনের কৃতকর্মের জন্য আপনাদের শাস্তিভোগ করতে হবে।”

‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ঈদের পর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে বিএনপি।

আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, “বিএনপি আন্দোলনের ডাক দিচ্ছে- হুমকি দিচ্ছে। বিএনপির একজন বলছেন, তারা কুচকাওয়াজ করবেন। আরেকজন বলেন যুদ্ধ করবেন। কুচকাওয়াজ করেন, বাঁশি বাজান আর ঢোল বাজান, ঘরে বসে বাজান। কেউ বাধা দেবে না।

“যারা এই ধরনের আন্দোলনের ডাক দেবেন তাদের দায় নিতে হবে।”

শোকের মাস অগাস্টের প্রথম দিনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ দেশরত্ন পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “তাদের (বিএনপি) একজন বলছেন, যুদ্ধ করবেন। কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন? দেশের সঙ্গে নাকি জনগণের সঙ্গে। জনগণ শান্তিতে আছেন, তারা কোন আন্দোলন চায় না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং আন্দোলনের ভয় কাদের দেখাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ আন্দোলন করতে করতে এখানে এসেছে।”

তিনি বলেন, “১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস। এই দিনে বিএনপির নেত্রী আনন্দ করেন, ফূর্তি করেন। তার রুচিতে কীভাবে আসে সেটা তিনিই জানেন।”

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন, “আমি ঢাকার একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে মুক্তিযুদ্ধ সময়কালে কার কী ভূমিকা ছিল, কে কোথায় ছিল, কে কোথায় লুকিয়ে ছিল, কাকে কোথায় থেকে বের করে আনা হয়েছে- তা আমি জানি।”

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, “নিজের কর্মীদের মার খাওয়ার ভয়ে বিএনপি আন্দোলনের কথা বলছেন।”

বিএনপিকে দল সামলানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আগে নিজেদের ঘর সামলান। নিজেরা মারামারি করে ঘরে তালা মারেন। কমিটি ঘোষণার পর দেখছেন না কী হচ্ছে আপনাদের ঘরে? ঘর সামলায়ে তারপর আন্দোলনের কথা বলেন।”

“আন্দোলন করবেন, করেন। দেখবো কতো ধানে কতো চাল। আপনাদের আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগের একটি থানাই যথেষ্ট। ২০১৩ সালের মতো আন্দোলন করলে আপনাদের ঢাকা ছাড়া করা হবে।”

মন্ত্রী বলেন, “আপনাদের আন্দোলন আমরা দেখেছি, আপনাদের আমরা চিনি-বোরকা পরে আদালতে যান। একই ঘরে বসে পায়খানা-প্রস্রাব করেন আর সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এই হলো আপনাদের আন্দোলন।”

“রাজনৈতিক কর্মসূচি দিলে আমরাও কর্মসূচির মাধ্যমে মোকাবেলা করবো। নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচিতে কোন বাধা নেই।”

“নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচিতে আইন শৃংখলার বিষয়ে রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন কামাল ভাই। সহিংস আন্দোলন করলেই খবর আছে।”

সংলাপের কথা নাকচ করে তিনি বলেন, “অনেকে অনেক কথা বলেন, সংলাপের কথা বলেন। কীসের সংলাপ? দেশে কী কোন রাজনৈতিক সংকট আছে? দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। তার আগে নয়।”

বঙ্গবন্ধুসহ গোটা পরিবারের হত্যার পেছনে তৎকালীন সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন বলেও অভিযোগ করেন কামরুল।

“সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে হিসাব-নিকেশ করলেই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর খুনিদের বিদেশে চাকরি ও পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল কে? জিয়াউর রহমান। সেই পৈশাচিক খুনির দল হলো বিএনপি।”

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ, বাংলাদেশ দেশরত্ন পরিষদের সভাপতি চিত্ত রঞ্জন সাহা, মনোরঞ্জন ঘোষাল বক্তব্য দেন।