দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময়ে এই হুঁশিয়ারি দেন।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে ঈদের পরেই আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বিএনপি।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা আগাম নির্বাচনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে বিএনপিকে মোকাবেলার ঘোষণা দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে বলেছেন, আমাদের আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক। দেশে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হোক, আন্দোলনের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, সেরকম কোনো আন্দোলন আমরা করতে চাই না।
“সরকার যদি সমঝোতার মধ্যে আসতো, তাহলে কোনো সমস্যা থাকতো না। কিন্তু তারা (সরকার) আলোচনা কিংবা সংলাপের পথে নেই। তারাই দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের কোনো বৈধতা নেই দাবি করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করছেন তারা।
“জনগণ সবার অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এই দাবিটি ৫ জানুয়ারি আগের থেকেই তারা করে আসছে। সেজন্য দেশের চিন্তাশীল নাগরিক ও বিদেশিরাও বলছেন, অতি দ্রুত একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।”
এই নির্বাচনের দাবিতে জনগণকে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ফখরুল বলেন, “আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ রয়েছে। সেজন্য আমরা আশাবাদী এবারের আন্দোলনে সফলতা আসবে।”
শিগগিরই দলের স্থায়ী কমিটি এবং ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান বিএনপির মহাসচিব।
“এরকম অবস্থায় আমাদের আন্দোলন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে এভাবে ক্ষমতা ধরে রাখা যাবে না।”
৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে আন্দোলনের ব্যর্থতা ও মহানগর বিএনপির নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “৫ জানুয়ারির আন্দোলনে আমাদের ব্যাপক সফলতা রয়েছে।
“যারা বলেন, ওই আন্দোনের আমরা সফল হইনি, তাদের সঙ্গে আমি একমত নই। সারাদেশে ব্যাপক আন্দোলন হয়েছে। অসংখ্য মানুষ সরকারের নির্যাতনে নিহত হয়েছেন। জনগণ আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে ছিল।”
সম্প্রতি দলের ভাইস-চেয়ারপারম্যান সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বাধীন ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব কমার ইঙ্গিত দিয়ে এবারের আন্দোলনে সফলতা নিয়ে সংশয় তুলে ধরে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তা ‘অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দেন ফখরুল।
“এই নিয়ে যেসব কথা বলা হচ্ছে- এটা স্রেফ অপপ্রচার। জামায়াতে ইসলামী আমাদের ২০ দলীয় জোটের শরিক দল। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি।”