অপূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে চট্টগ্রাম বিএনপিতে ‘হতাশা’

রাজনীতির মাঠে রাজধানীর পর বন্দরনগরীকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হলেও সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কার‌্যক্রম চলছে অপূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়ে।

মিন্টু চৌধুরী জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, চট্টগ্রামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2014, 07:54 AM
Updated : 30 July 2014, 07:54 AM

২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে দুই পক্ষের সংঘর্ষের কারণে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সম্মেলন পণ্ড হওয়ার পর ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে সভাপতি ও ডা. শাহাদৎ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি করে দেয়া হয়।

ওই সময় কেন্দ্র থেকে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছিল নতুন কমিটিকে। গঠণতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর মেয়াদী চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি অনুর্ধ্ব ১০১ সদস্যের হওয়ার কথা। কিন্তু এ পর্যন্ত কমিটিতে শুধু সহ-সভাপতি হিসেবে যোগ হয়েছে আবু সুফিয়ান ও শামসুল আলমের নাম। 

অপূর্ণাঙ্গ এই কমিটির নেতাদের দাবি, সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ততা আর সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা সম্ভব হয়নি।

ঈদের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার আশার কথা জানিয়ে নেতারা বলছেন, এর মাধ্যমে সরকারবিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা হয়ে উঠবে।

দলের তৃণমূলের কর্মীদের মতে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে ‘নানা ইস্যু’ হাতে পেয়েও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় চট্টগ্রামে বিএনপির আন্দোলন ‘পুরোপুরি সফল’ হতে পারেনি। তাছাড়া অনেক ‘ত্যাগী’ নেতা কমিটিতে বঞ্চিত হয়ে ‘অনেকটা নিষ্ক্রিয়’ হয়ে পড়েছেন। 

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঈদের পর সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দেন। কিন্তু কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হলে চট্টগ্রামে সরকারবিরোধী আন্দোলন কতটুকু সফল হবে তা নিয়েও তৃণমূলের কর্মীরা সন্দিহান।   

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদের পরপরই চট্টগ্রাম মাহনগর বিএনপির কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি করেই বিএনপি চট্টগ্রামে সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিয়ে সফলভাবে আন্দোলন পরিচালনা করবে।”

দীর্ঘ সময়েও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে না পারার কারণ জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, “২০০৯ সালে কমিটি হওয়ার পর থেকেই আমরা সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে ছিলাম। সরকারের দমন-পীড়ন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মধ্যেই আমাদের আন্দোলন করতে হয়েছে।

“নেতাকর্মীদের ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এখনো আমাদের অনেকেই বাড়িছাড়া। আন্দোলনে থাকায় মহানগর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা যায়নি। অন্য কোনো কারণ নেই।”

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানের দাবি, কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হলেও সাংগঠনিকভাবে তারা চট্টগ্রামে ‘বেশ শক্তিশালী’। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে বিএনপির শক্তিশালী কমিটি ও সংগঠন রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের অনেক নেতার অভিযোগ- মহানগর কমিটিতে ওয়ার্ড বা থানা পর্যায়ের কোনো প্রতিনিধি এখন পর্যন্ত স্থান পাননি। কিন্তু দলীয় কর্মসূচিতে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মীদের অংশগ্রহণই থাকে বেশি।

এ নিয়ে এক ধরনের হতাশা কাজ করছে বলেও তারা জানান।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান বলেন, “ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছিল। ঈদের পরেই সব পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে।”