ঈদের পর বিএনপির আন্দোলনের হুমকির পর তা রাজপথে মোকাবেলা করতে সরকারি দলের নেতাদের ঘোষণার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। কূটনীতিক ও বিশিষ্ট নাগররিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
খালেদা বলেন, “৫ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি। বিশ্বের কোনো দেশ ওই নির্বাচনকে গ্রহণ করেনি। দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্রুত সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। এটা জনগণের দাবি।
“দেশকে সামনে দিকে এগিয়ে নিতে হলে সব ভেদাভেদ ভুলে আজ দল-মত নির্বিশেষ সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”
দশম সংসদ নির্বাচন বয়কটের পর বিএনপি আগাম নির্বাচন দাবি করে এলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
আন্দোলনের কর্মসূচির বিষয়ে খালেদা বলেন, “আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে সামনে দিকে এগিয়ে যেতে চাই।”
নিজেদের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন যে সম্ভব নয় তা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে গেছে। জাতীয় নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, সেজন্য আমাদের ঐকমত্যে আসতে হবে। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।”
দেশবাসী ও নেতা-কর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “ঈদ আনন্দের হলেও দেশের মানুষের মধ্যে আনন্দ নেই। ব্যথা-বেদনা, ক্ষোভ-হতাশার মধ্যে তারা দিনযাপন করছে।”
বাংলাদেশের সর্বত্র গুম-অপহরণ-হত্যাকাণ্ড চলছে বলেও দাবি করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে ওই এলাকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা।
খালেদার ঈদ শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে ঢাকায় কূটনীতিক কোরের ডিন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত শাহের মোহাম্মদও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা, ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণসহ ৪১টি দেশের কূটনীতিকরা। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর কূটনীতিকদের আপ্যায়ন করা হয়।
বিএনপি নেতা সাবেক দুই কূটনীতিক শমসের মবিন চৌধুরী ও সাবিহ উদ্দিন আহমেদ এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সময় খালেদার সঙ্গে ছিলেন।
অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক আনোয়রুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক আবু আহমেদ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, মোস্তফা কামাল মজুমদার, এম আবদুল্লাহ, আমিরুল ইসলাম কাগজী, হাসনা মওদুদ, কবি মাহমুদ শফিক, চলচ্চিত্রকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, অভিনেতা আশরাফউদ্দিন উজ্জল, কণ্ঠশিল্পী কনক চাঁপা অনুষ্ঠানে ছিলেন।
ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিজেএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান কচি, আবদুস সালাম মুর্শেদী, শহিদুল্লাহ আজীম, মোহাম্মদ আলী, আবদুল আউয়াল, হায়দার আহমেদ খান, মাহমুদ খান বাবু, এস এম ফজলুল হক, সাবেক সচিব মার্গুব মোর্শেদ, ওমর ফারুক, জাফর আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, মাহবুবউদ্দিন খোকন, আ ন হ আখতার হোসেন, রুহুল আমিন গাজী, শওকত মাহমুদ, আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, এম এ মালেক প্রমুখ।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মাহমুদুল হাসান,শাহজাহান ওমর, আবদুল মান্নান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, এ এস এম আবদুল হালিম, জহুরুল ইসলাম, মাজেদুল ইসলাম, রুহুল আলম চৌধুরী, আবদুল কাউয়ুম, আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, খায়রুল কবীর খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নিতাই রায় চৌধুরী, নাসির উদ্দিন অসীম, কাজী আসাদুজ্জামান, কবির মুরাদ, জাফরুল হাসান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাইফুল আলম নিরব, হাবিব উন নবী খান সোহেল, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, আনোয়ার হোসাইন, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।
ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষ করে খালেদা জিয়া তার স্বামী রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেন এবং মোনাজাত করেন।