‘বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায় সরকার’

সরকার বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায় বলে প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে আলোচনার কোনো প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন না বলে দাবি করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2014, 05:01 PM
Updated : 25 July 2014, 06:10 PM

আওয়ামী লীগ ‘কৌশলে একদলীয় বাকশাল’ বাস্তবায়ন করছে বলেও অভিযোগ তার।

সম্প্রতি লন্ডন সফরে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার প্রশ্ন কেন বার বার তোলা হচ্ছে সেটি তার বোধগম্য নয়।

বিএনপি-জামায়াত সংসদে না থাকলেও কিছু যায় আসে না বলে সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “লন্ডনে বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা তিনি করবেন না। এর অর্থ হচ্ছে বিএনপিকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখা।”

শুক্রবার রাজধানীতে এক ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্যে লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন তিনি।

তিনি বলেন, “ব্রিটিশ সরকারের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মূলত গার্ল সামিট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিষয়টিও এসেছিল।

“ওই সাক্ষাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। আলাপ-আলোচনা করে দ্রুত নির্বাচনের কথা বলেছেন।

“কিন্তু সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই বৈঠক সম্পর্কে বেমালুম মিথ্যাচার করলেন।”

লন্ডন সফরের দ্বিতীয়দিন গত মঙ্গলবার ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

বৈঠকে ক্যামেরন বাংলাদেশের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ‘অতীত’ আখ্যায়িত করে সামনের দিকে তাকাতে বলেছেন বলে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “কেবল বিএনপি নয়, সিপিবি, গণফোরাম, জেএসডি কেউই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়নি। বর্জন করেছে। আওয়ামী লীগ প্রহসনের নির্বাচনের নামে তামাশা করেছে। জোর করে তারা ক্ষমতায় বসেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি, দলীয়করণ ও মিথ্যাচার করা হচ্ছে। প্রশাসন, বিচার বিভাগ কোনো কিছুই দলীয়করণ থেকে বাকি নেই।”

সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে দাবি করে তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে থাকতে পারে না।

“এটা কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই অবস্থা। তাই জাতিকে রক্ষা করতে হলে আজ শিক্ষিত সমাজকে জেগে উঠতে হবে।”

বিজয় নগরের একটি হোটেলে ‘ন্যাশনাল অ্যাসোয়েশন অব গ্রাজুয়েটস, বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ফখরুল।

অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সদরুল আমিন, আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, আখতার হোসেন খান, সুকোমল বড়ুয়া, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটস ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, শফিউল বারী বাবু প্রমুখ বক্তব্য দেন।