শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আমরা মনে করি, ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের অপরাধে বেদনা তাড়া করে বলেই প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।”
গত ২২ জুলাই লন্ডনের ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
পরে ব্রিটিশ সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন, যে নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ”
এ প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “সাক্ষাতের সময়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, সে খবর সংবাদপত্রে দেখলাম। অথচ এই সরকার কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না। বরং প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বিভ্রান্ত করতে নানা রকম মিথ্যাচার করছেন।”
এই বিএনপি নেতা সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, বন্দুক দিয়ে সব অন্যায়কে মুছে ফেলা যাবে না। অবিলম্বে আলাপ-আলোচনা করে সব দলের অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আমরা আবারো জানাচ্ছি।”
রিজভী বলেন, “৯০-এর গণআন্দোলনের পর এরশাদকে বিশ্ব বেহায়া উপাধি দিয়েছিলেন প্রখ্যাত চিত্রকর কামরুল হাসান। দেশের মানুষ ভাবছে, এখন শেখ হাসিনাকে কি উপাধি দেয়া যায়। অনেকে ভাবছেন, এরশাদকে ‘লায়ার ওয়ার্ল্ড’ এবং শেখ হাসিনাকে ‘লায়ার ইউনিভার্স’ উপাধি দেয়া যেতে পারে।”
সরকারের ব্যর্থতায় ঈদে ঘরমুখী মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ঈদের প্রাক্কালে দেশে সর্বত্র হাট-ঘাট-বন্দর, মহানগর, সড়ক-মহাসড়কে চলছে পুলিশ ও সরকারি ক্যাডারদের চাঁদাবাজীর মহোৎসব। সড়ক-মহাসড়ক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।”
যোগাযোগমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “মানুষের দুর্ভোগের প্রতি মন্ত্রীর একেবারেই ভ্রুক্ষেপ নেই। মন্ত্রীর নিজের নির্বাচনী এলাকার রাস্তা-ঘাটেরও বেহাল অবস্থা। রাস্তাঘাটের উন্নয়নের বুলি শুধুমাত্র মিডিয়াতেই আমরা জানতে পারি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর মুখ দিয়ে। তার বক্তব্য শুনে মনে হয়, দেশের সব রাস্তা-ঘাট ঝাঁ চকচকে মসৃণ। এদেশের মানুষ আর কতো প্রহসন দেখবে?”
ঈদের আগেও সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে পুলিশ ‘গ্রেপ্তার-অভিযান’ চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “তাদের পুলিশ বাহিনী প্রতিদিন গ্রেপ্তার করছে নেতা-কর্মীদের। সাতক্ষীরায় কলেজ শিক্ষক এস এম বিপ্লবকে হত্যা করা হয়েছে। সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব আজ বাড়ি ছাড়া। এভাবে সর্বত্র সরকারের তাণ্ডব চলছে।”
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, আসাদুল করীম শাহিন ও মীর সরফত আলী সপু উপস্থিত ছিলেন।