‘আমরা সবাই খালেদা গ্রুপ’

ঢাকা মহানগর বিএনপিতে কোনো ‘বিভাজন’ নেই দাবি করে আগামী দিনে আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয় জানিয়েছেন নতুন আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2014, 09:03 AM
Updated : 23 July 2014, 09:03 AM

বুধবার দুপুরে নতুন কমিটির প্রথম বৈঠকের পর তিনি বলেন, “খোকা কিংবা আমার তৈরি কোনো গ্রুপ নেই। গ্রুপিংয়ের বিষয়টি কিছু মানুষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই দলের একটাই গ্রুপ, তা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার গ্রুপ।”

নয়া পল্টনে দলের মহানগর কার্যালয়ে ৪৫ মিনিটের এই বৈঠকে কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও নবগঠিত উপদেষ্টামণ্ডলীর কেউ ছিলেন না। 

ফাইল ছবি

ঢাকার সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাস বলেন, “মহানগর কমিটি গঠনের পর সরকারের কথা-বার্তায় মনে হচ্ছে- আসলে এই কমিটি তাদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা আগামীতে দেশনেত্রীর দেয়া দায়িত্ব নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।”

নতুন কমিটির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী সোহেলের সঙ্গে আহ্বায়কের ‘বিরোধ’ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা আব্বাস হেসে ফেলেন।

এরপর মাইক সোহেলের কাছে দিয়ে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে সোহল ভাল বলতে পারবে।”

হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, “মির্জা আব্বাস ভাই আমার বড় ভাই। আমি ছোট ভাই। আমরা ভাই-ভাই। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নাই।”

বৈঠকের পর সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নবগঠিত কমিটির সদস্য ও নেতা-কর্মীরা শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কবরে জানাবেন।

বৈঠকে ‘মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে’ ঈদের পর আন্দোলন কর্মসূচি সফল করতে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এছাড়া  দলের মহানগর শাখাকে শক্তিশালী করতে সব থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পর্যায়ক্রমে পুনর্গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার রোগমুক্তি কামনা করা হয়। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ‘বর্বর হত্যাযজ্ঞের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ‘এই হত্যাযজ্ঞ’ বন্ধের উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানায় মহানগর কমিটি।

কমিটির নেতারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতা-কর্মীদের নামে থাকা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার এবং আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানান।

পাশাপাশি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ দেশে গুম-খুন হচ্ছে অভিযোগ করে র‌্যাব বিলুপ্তির দাবি জানানো হয় বৈঠক থেকে।

দলের যুগ্ম আহবায়ক আবদুল আউয়াল মিন্টু, কাজী আবুল বাশার, আবু সাঈদ খান খোকন, সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকত উল্লাহ বুলু, এস এ খালেক, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাসির উদ্দিন অসীম, শামসুল হুদা, আবদুল মজিদ, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, সাজ্জাদ জহির, ইউনুস মৃধা, একরামুল হোসেন, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, সাদেক আহমেদ খান, নবী উল্লাহ নবী, মিসেস ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টিসহ ৪১ জন সদস্য বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

গত শুক্রবার মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ৫২ সদস্যের এই নতুন আহ্বায়ক কমিটির পাশাপাশি চার সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির নাম ঘোষণা করে বিএনপি। 

৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনে ঢাকা মহানগরের নিষ্ক্রিয়তার কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বধীন ১৯ সদস্যের আহবায়ক কমিটির বিলুপ্ত করে এই কমিটি গঠন করা হয়।

২০১১ সালে ১৪ মে খোকাকে আহবায়ক করে আহবায়ক কমিটিকে ৬ মাসের মধ্যে থানা ও ওয়ার্ডে সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে বলা হলেও তারা তিন বছরে তা পারেনি।