‘দুর্নীতি করতে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু’

দুর্নীতি করার জন্য সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2014, 09:25 AM
Updated : 19 July 2014, 12:38 PM

শনিবার দুপুরে নয়া পল্টনে হোটেল ভিক্টরিতে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, “পদ্মাসেতু প্রকল্পে তাদের দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বাতিল করেছে। এখন তারা দুর্নীতি করতে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এই সেতু নির্মাণে এমন সব প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে, যাদের কোনো নাম-ঠিকানা নেই।”

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘সংকটময়’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা অবৈধ ও অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় বসে আছে। সর্বত্র ক্ষমতাসীনরা লুটপাট ও দুর্নীতি করছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে থেকে তারা ১২ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে।”

আন্দোলনকে সামনে রেখে গঠিত ঢাকা মহানগরের নতুন নেতৃত্ব সংগঠন শক্তিশালী করতে সফল ভূমিকা রাখবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন বিএনপির মুখপাত্র।

ফাইল ছবি

তিনি বলেন, “আমরা কমিটি গঠনের মাধ্যমে সংগঠন গোছানোর কাজ করে যাচ্ছি। মির্জা আব্বাস একজন পরীক্ষিত নেতা। হাবিব-উন নবী খান সোহেলও একজন ত্যাগী নেতা। আমরা বিশ্বাস করি, তাদের নেতৃত্বে মহানগর কমিটি আরো শক্তিশালী হবে।”

শুক্রবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ৫২ সদস্যের ঢাকা মহানগরের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি। সংগঠনের সদস্য সচিব করা হয়েছে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলকে।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের বর্ধিত সভা-২০১৪ উপলক্ষে এই সভা হয়। এতে সারাদেশ থেকে ফ্রন্টের কয়েকশ নেতা অংশ নেন।

সংখ্যালঘুদের ওপর বিভিন্ন সময়ে হামলার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “তারা মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বললেও বাস্তবে দেখা যাবে, এদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি তারাই (আওয়ামী লীগ) বেশি দখল করেছে। বর্তমান সরকারের আমলেই সংখ্যালঘুরা বেশি নির্যাতিত হয়েছেন। তাদের মন্দির-উপাসনালয় ভাংচুর হয়েছে। প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়েছে।’’

আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করে বলে দাবি করেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

তিনি বলেন, “রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনের এক অনুষ্ঠানে সরকারের মন্ত্রী আমির হোসেন আমু সংখ্যালঘুদের ওপর বিএনপি হামলা চালিয়েছে বলে যেসব বক্তব্য রেখেছেন তা মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর রাজনৈতিক ঘটনাবলীকে রঙ দিয়ে তাকে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ অপপ্রচার চালিয়েছিল। এটা সঠিক নয়।”

১৯৭২-৭৫ সালে বিভিন্ন জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও জাসদের গণবাহিনীর তৎপরতারও সমালোচনা করেন ফখরুল।

বক্তব্যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের সংগঠন শক্তিশালী করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সংগঠনের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের উপদেষ্টা নিতাই রায় চৌধুরী, সহ ধর্মবিষয়ক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, দীপের দেওয়ান, জন গোমেজ, দেবাশীষ রায় মধু ও সঞ্জীব চৌধুরী প্রমুখ নেতা বক্তব্য রাখেন।

বর্ধিত সভার শুরুতে গীতা-ত্রিপিটক-বাইবেল পাঠ করা হয়।